Ragdoll cats are The Cats That Will Make You Forget All Your Troubles

র‍্যাগডল হলো বিড়ালের এমন একটি জাত যাদের স্বতন্ত্র রঙের কোট এবং নীল রঙের চোখ থাকে। র‍্যাগডল বিড়ালগুলো বিনয়ী, শান্ত মেজাজ এবং স্নেহময় ব্যাক্তিত্বের জন্যে অনেক বেশি পরিচিত। র‍্যাগডল বিড়ালগুলো কিছুটা কুকুরের মতো হওয়ার কারণে এদেরকে প্রায়ই “কুকুরের মতো বিড়াল” নামে বলা হয়। 

নিস্তেজ এবং শিথিল হবার প্রবনতার কারণে  এই বিড়ালগুলোর নামকরণ করা হয়েছিল র‍্যাগডল বিড়াল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য উভয় দেশেই র‍্যাগডল বিড়ালগুলো অনেক বেশি জনপ্রিয়। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে র‍্যাগডল বিড়াল ও র‍্যাগডল বিড়ালের খাদ্য, যত্ন, ইতিহাস ইত্যাদি অন্যান্য সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।  

About

র‍্যাগডল একটি বড় আকৃতির বিড়ালের জাত। র‍্যাগডল বিড়ালগুলো অনেক বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সামাজিক ব্যক্তিত্বের হয়ে থাকে। এদের ওজন সাধারণত ২০ পাউন্ডের মতো হয়ে থাকে। র‍্যাগডল বিড়ালগুলোর দৈর্ঘ্য অন্যান্য বিড়ালের জাত গুলোর থেকে বেশি। এদের  নাক থেকে লেজের দৈর্ঘ্য ৪০ ইঞ্চি অব্দি হয়ে থাকে। র‍্যাগডল বিড়ালগুলোর  কোট  মাঝারি সাইজের হয়ে থাকে।র‍্যাগডল বিড়ালগুলোর কোট লাল, নীল, সীল, চকলেট এবং ক্রিম সহ আরও অনেক রঙের  হয়ে থাকে। এদের নীল রঙের চোখগুলো র‍্যাগডল বিড়ালকে অন্যান্য বিড়াল থেকে আরও অনেক বেশি আকর্ষনীয় করে তুলছে । র‍্যাগডল বিড়ালগুলোর গড়  আয়ু ১৭ বছর অব্দি হয়ে থাকে।  

বড় এবং সুন্দর র‍্যাগডল বিড়ালগুলো চার বছর অব্দি তাদের পূর্ণ আকারে পৌঁছাতে সময় নেয়। এদের ওজন  গড়ে এদের ১৫ পাউন্ড হয়ে থাকে। র‍্যাগডল বিড়ালগুলো পরিবারের সদস্যদের  কোলে থাকতে অনেক বেশি পছন্দ করে। র‍্যাগডল বিড়ালগুলোকে অন্যান্য বিড়ালের জাতগুলোর মতো  বেশি ব্যায়াম বা খেলাধুলার প্রয়োজন হয় না। 

Health and Treatment

র‍্যাগডল বিড়ালদের জীবনকাল ১৩-১৮ বছরের হয়ে থাকে। র‍্যাগডল বিড়ালগুলো একটি  স্বাস্থ্যকর  জাতের বিড়াল। সাধারণত র‍্যাগডল বিড়ালেরা স্বাস্থ্যঝুকি মুক্ত বিড়ালের একটি জাত। তবে অন্যান্য বিড়ালের মতো র‍্যাগডল বিড়ালের ও বেশি কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। র‍্যাগডল বিড়ালদের যেসকল স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে থাকে এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ 

মুখ ও মাড়ির রোগ, শ্বাসযন্ত্রের ব্যাধি, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, পাকতন্ত্রজনিত রোগ। এই সকল সকল রোগ হলে অবশ্যই ডাক্তারের নিকট নিয়ে যেতে হবে। বিড়ালের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অবশ্যই বিড়ালকে নিয়মিত ব্যায়াম করাতে হবে। র‍্যাগডল বিড়ালের সুস্থতার জন্য মাসিক চেকাপের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে নিরাময় পেতে বিভিন্ন প্রকারের চিকিৎসা প্রদান করতে হয়।নিন্মে র‍্যাগডল বিড়ালের চিকিৎসাগুলো নিয়ে উল্লেখ করা হলোঃ 

Kidney Disease:

বিড়ালের রোগগুলোর মধ্যে একটি রোগ হলো কিডনি রোগ। বিভিন্ন রকমের কিডনি রোগ হয়ে থাকে। যেমন, 

  • কিডনি টিউমার
  • কিডনি তে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রামণ
  • কিডনিতে আঘাত
  • জন্মগত কিডনি সমস্যা 
  • কিডনির অংশে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ
  • টক্সিন বা নির্দিষ্ট ঔষুধের প্রদাহ। 

যেকোন বয়সের বিড়ালের কিডনি রোগ হতে পারে তবে বয়স্ক বিড়াল বিশেষ করে সাত বছর বা তার বেশি বয়স্ক বিড়ালের মধ্যে কিডনি রোগ বেশি দেখা যায়। 

কিডনি রোগের লক্ষণ সমুহঃ 

  • স্বাভাবিকের থেকে বেশি খাবার গ্রহণ করা
  • ক্ষুধা হ্রাস পাওয়া যার কারণে ওজন ও হ্রাস পায়
  • নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ
  • বমি হওয়া 
  • দুর্বল গ্রুমিং 

উপোরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ডাক্তার বিড়ালের শারীরিক অবস্থা পরিক্ষা রক্তের পরীক্ষা এবং প্রসাব পরীক্ষা করে চিকিৎসা প্রদান করবেন। 

Respiratory problems

র‍্যাগডল বিড়ালের অন্যতম একটি রোগ হলো শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা হলে বিড়লাএর হাঁচি, সর্দি, কাশি, চোখ থেকে স্রাব, জ্বর, মুখের মধ্যে নাক এবং চোখের চারপাশে আলসার ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। এছাড়াও বিড়ালের মুখে এবং নাকে থাবা শুরু হয়, গিলতে সমস্যা হয়, শ্বাস নেওয়ার সময়ে শ্বাস কষ্ট বা শ্বাসরোধের শব্দ হয়। 

শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার চিকিৎসা নিন্মরুপঃ 

  • বিড়ালের চোখ এবং নাকের চারপাশে একটি উষ্ণ, ভেজা কাপড় দিয়ে আলতো করে পরিষ্কার করতে হবে। 
  • বাথরুমে বাষ্প তৈরি করে গরম ঝরনা চালিয়ে বিড়ালকে সেখানে অল্প সময়ের জন্য ভিতরে রাখতে হবে।
  • বিড়ালের ক্ষুধা ধরে রাখার জন্য বিড়ালের প্রিয় খাবার দিতে হবে
  • বিড়াল কে একটি উষ্ণ, শান্ত এবং আরামদায়ক জায়গায় বিশ্রামের সুযোগ করে দিতে হবে। 
  • শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার লক্ষণ শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে তা হলে বিড়াল নিউমোনিয়ে এবং ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। 
  • ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ প্রদান করা যাবে না। কারণ অনেক ঔষধই আছে যেগুলো বিড়ালের জন্য বিষাক্ত। যেমন, অ্যাডভিল, অ্যাাসিটামিনোফেন। 

এছাড়াও বিড়ালের হাইপারথাইর‍য়েডিজম, প্রস্রাবের সমস্যা এবং পেটের সমস্যা হতে পারে। এই সকল সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের নিকট নিয়ে যেতে হবে। 

Care

বিড়ালের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিনিয়ত বিড়ালের যত্ন নেওয়া উচিত। নিন্মে র‍্যাগডল বিড়ালের যত্ন নেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলোঃ 

  • র‍্যাগডল বিড়ালগুলো যেহেতু সিল্কি এবং একক কোট থাকে তাই কোটের জট এড়ানোর জন্য  সপ্তাহে অন্তত দুইবার ব্রাশ করতে হবে। 
  • বিড়ালের নখগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে সপ্তাহে একবার  নখ কাটতে হবে। 
  • র‍্যাগডল বিড়ালগুলি উদ্যমি এবং সামাজিক বিড়াল এরা ঘরের মধ্যেই খেলাধুলা করতে পছন্দ করে। তাই প্রতি দিন বিড়ালকে সর্বনিন্ম এক ঘন্টা খেলাধুলা করতে দিতে হবে। 
  • র‍্যাগডল বিড়ালগুলোর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে রুটিন অনুযায়ী খাবার দিতে হবে।  
  • বিড়ালকে বেশি পানি পান করাতে হবে।
  • বিড়াল স্বাস্থ্য ঝুকি নিয়ে চিন্তামুক্ত থাকতে পশু চিকিতসকের নিকট নিয়ে গিয়ে চেকাপ করাতে হবে। 

Food and Nutrition

র‍্যাগডল বিড়লেরা তাদের খাদ্যের বিষয়ে উশৃঙ্খল টাইপের হয়ে থাকে আর তাই তাদের পছন্দ অনুযায়ী খাবারের রেসিপি খুজে পাওয়া অনেকটাই একটি কঠিন কাজ হয়ে থাকে। বর্তমানে  বাজারে র‍্যাগডল বিড়ালের অনেক খবার কিনতে পাওয়া গেলেও সেগুলার বেশিরভাহ গুলোই উচ্চ-মানের খাবার নয়।  যার ফলে র‍্যাগডল বিড়ালগুলোর স্বাস্থুঝুকি থেকেই যায়। নিন্মে সেরা কয়েকটি র‍্যাগডল খাবারের নাম উল্লেখ করা হলোঃ 

  • Small Human- Grade Fresh Cat food
  • Cat Chow Indoor Dry Cat Food
  • Royal Canin Adult Dry Cat Food
  • Purina Pro Plan Dry Cat Food 
  • Wellness Complete Health Dry Cat Food 

উপরোক্ত সকল খাবারই প্রোটিন এ সম্পৃদ্ধ খাবার। এগুলার মুল উপাদান হলো গরু, মুরগি কিংবা মহিসের মাংস। উপোরক্ত সকল খাদ্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা থেকে সার্টিফাই ফুড। এদের মধ্যে কোন প্রিজারভেটিভ নেই। 

History

বিড়ালের অন্যান্য জাতের তুলনায় র‍্যাগডল জাতটি তুলনামুলকভাবে নতুন একটি বিড়ালের  জাত। ১৯৬০ এর শদকে ক্যালিফর্নিয়ায় বিড়ালের এই জাতটি বিকাশিত হয়েছিল। অ্যান বেকার নামের একজন বিড়াল প্রজনন কারী প্রেমময় ব্যাক্তিত্বের পাশাপাশি সুন্দর একটি বিড়ালের জাত তৈরি করতে চেয়েছিলো। আর তাই তিনি বেশ কয়েকটি বার্মিজ-সদৃশ বিড়ালের সাথে জোসেফাইন নামের এক অজানা বিড়ালের জাতের প্রজনন শুরু করেন। 

এবং কয়েক প্রজন্ম পরে অ্যান বেকার অবশেষে র‍্যাগডল জাতের বিড়াল তৈরি করতে সক্ষম হন। এই বিড়ালগুলো তাদের নন-ম্যাটিং পশম, বড় আকার এবং বহির্গামী ব্যাক্তিত্বের জন্য অনেক বেশি প্রশংসিত হয়েছিলো। র‍্যাগডল বিড়ালগুলো সি এফ এ এবং টি আই সি দ্বারা স্বীকৃত একটি স্বতন্ত্র বিড়ালের জাত।  

Appendix

যারা সাধারণত  নরম, নম্র এবং  আদরকারী বিড়ালের জাত পছন্দ করেন তাদের জন্য র‍্যাগডল জাতের বিড়ালগুলো একদম পারফেক্ট। র‍্যাগডল বিড়াল গুলো পরিবারের সকল বয়সের মানুষদের সাথে এবং বাড়ির অন্যান্য পোষা প্রাণিদের সাথে খুব সহজেই মিশে যায়। এই বিড়ালগুলো যেমন দেখতে সুন্দর তেমনি বিড়ালগুলির ব্যক্তিত্ব সবাইকে মুগ্ধ করে। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে র‍্যাগডল বিড়ালে সম্পর্কে একটি বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন এর পরেও যদি কোন তথ্য জানার থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।  

Share with friends and families

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *