Siberian Cats are The Cats That Will Make You Fall in Love with Cats All Over Again

রাশিয়ান প্রাচীন গৃহপালিত বিড়ালের জাত গুলোর মধ্যে একটি জনপ্রিয় বিড়ালের জাত হলো সাইবেরিয়ান বিড়াল। সাইবেরিয়ান বিড়ালের  আনুষ্ঠানিক নাম সাইবেরিয়ান ফরেস্ট বিড়াল হলে এটিকে সাধারণত সাইবেরিয়ান বা সাইবেরিয়ান বিড়াল হিসেবেই উল্লেখ করা হয়। সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলোকে সকল আধুনিক লম্বা কৈশিক বিড়ালের পূর্বপুরুষ মনে করা হয়।

সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো সিয়াবেরিয়া থেকে আসা একটি প্রাকৃতিক বিড়ালের জাত এবং সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো রাশিয়ার জাতীয় বিড়াল। সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো একটি মাঝারি আকারের বিড়াল। যাদের সুন্দর চেহারা এবং আধা লম্বা চুল বিড়ালগুলোকে অনেক বেশি আকর্ষনীয় এবং শাস্বরুদ্ধকর করে তুলেছে। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে সাইবেরিয়ান বিড়াল এবং সাইবেরিয়ান বিড়ালের ইতিহাস, স্বাস্থ্য যত্ন, খাদ্য আরোও ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

About

সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো তাদের স্নেহময় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের জন্য অনেক বেশি পরিচিত। সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো পরিবারের শিশুদের সাথে এবং অন্যান্য প্রাণীদের সাথে  অনেক বেশি  বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। এছাড়াও সাইবেরিয়ান বিড়ালের আরও বেশ কিছু পরিচিতি রয়েছে। 

  • সাইবেরিয়ান বিড়ালের ওজন ১৫ থেকে ২০ পাউন্ডের হয়ে থাকে।
  • একটা সাইবেরিয়ান বিড়ালের দৈর্ঘ্য ১৭ থেকে ২৫ ইঞ্চি হয়ে থাকে।
  • সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো প্রায় পাঁচ বছর বয়সে তাদের পরিপক্ক শরীরে পৌছায়।
  • সাইবেরিয়ান কুকুরের মতো আচারণের জন্য অনেক বেশি পরিচিত। 
  • সাইবেরিয়ান বিড়ালদের সামনের পা থেকে পিছনের পা দুটি সামান্য বড় এবং তাদের পা গুলিতে অবিশ্বাস্য শক্তি থাকে। তারা উচ্চ লাফ দিতে পারে।  

Health and Treatment

সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো প্রাকৃতিক ভাবে বিকাশিত হওয়া একটি বিড়ালের জাত তাই  এই বিড়ালগুলো অন্যান্য বিড়ালদের থেকে অনেক বেশি সুস্থ থাকে। সাইবেরিয়ান বড়ালদের জীবনকাল ১২-১৫ বছরের হয়ে থাকে। সাইবেরিয়ান বিড়ালদের কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। নিন্মে সাইবেরিয়ান বিরালদের স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা নিয়ে বর্ণনা করা হলোঃ 

Periodontal

সাইবেরিয়ান বিড়ালের একটি সাধারাণ স্বাস্থ্য সমস্যা হলো পেরিওডন্টাল। বিড়ালের দুর্ঘটনাজনিত প্রজননের কারণে দাঁত এবং মাড়িতে এই রোগ হয়ে থাকে। পেরিওডেন্টাল রোগ থেকে বিড়ালকে রক্ষা করার জন্য বিড়ালকে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করাতে হবে। এবং প্রতি সপ্তাহে কম পক্ষে ৪-৫ বার বিড়ালের দাঁত এবং মারি পর্যবেক্ষণ করতে হবে 

Feline Lower Urinary Tract Disease

 ফেলাওন লোয়ার ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ডিজিজ হল বিড়ালের মুত্রাশয় এবং মুত্রনালীর একটি রোগ। যদি এই রোগের চিকিৎসা না করা হয় তাহলে মূত্রাশয়ে পাথর এবং টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই রোগে আক্রান্ত হলে বিড়াল লিটার বক্সের বাহিরে প্রসাব করে, প্রস্রাবের সাথে রক্ত বের হয়, দুর্গন্ধ হয় এবং বিড়াল যৌনাঙ্গ চাটতে থাকে। 

বিড়ালের জন্য ফেলাইন লোয়ার ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ডিজিজ অত্যন্ত বিপদজনক তাই রোগটি মারাত্মক পর্যায়ে পৌছানোর পূর্বেই বিড়ালকে ডাক্তারের নিকট নিয়ে যেতে হবে।  

Polycystic Kidney Disease

পলিসিস্টিক কিডনি রোগটি সাইবেরিয়ান বিড়ালদের একটি বংশগত রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে বিড়ালের তৃষ্ণা বৃদ্ধি পায়, ঘন ঘন প্রস্রাব করে, ক্ষুধা হ্রাস পায়, ওজন হ্রাস পায়। 

পলিসিস্টিক রোগের জন্য কোন চিকিৎসা নেই। তবে এই রোগকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে অবশ্যই ঔষুধ, বিশেষ খাদ্য এবং তরল থেরাপি দিতে হবে। 

Hypertrophic Cardiomyopathy

 হারপারট্রফিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি হলো বিড়ালের হৃদপিন্ডের পেশির একটি রোগ। এটি একটি বংশগত রোগ। এই রোগের প্রভাব কবে শুরু সেটা বোঝার কোন উপায় নেই। কিছু বিড়াল এই রোগের কারনে ১ বছর বয়সেও মারা যেতে পারে আবার কিছু বিড়ালের ৬-৮ বছর অব্দি এই রোগের কোন জটিলতা লক্ষ্যায়িত হয় না। এই রোগে আক্রান্ত হলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। 

Care

সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো অনেক বেশি বুদ্ধিমান এবং ব্যতিক্রমধর্মী বিড়াল। বিড়ালের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে অবশ্যই যত্ন নিতে হবে। নিন্মে সাইবেরিয়ান বিড়ালের যত্ন নিয়ে বর্ণ্না করা হলোঃ

  • সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো অনেক বেশি আহোরণ, অন্বেষণ এবং খেলতে পছন্দ করে। তাই বিড়ালকে মানসিক ভাবে উদ্দীপিত করতে এবং শারীরিকভাবে সুস্থ রাখতে খেলনা কিনে দিতে হবে। 
  • সাইবেরিয়ান বিড়ালদের কোটের তিনটি স্তর থাকে। একটি খাটো, মাঝখানের টা কিছুটা লম্বা এবং আরেকটি দীর্ঘ হয়ে থাকে। বিড়ালের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য এবং চর্মরোগ এড়াতে নিয়মিত কোটগুলো ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালের নখগুলো পরিষ্কার রাখতে নিয়মিত নখ কেটে  দিতে হবে। 
  • বিড়ালকে দাঁতের রোগ থেকে রক্ষা করতে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালের শারীরিক সুস্থতা এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী খাবার দিতে হবে।  

Food and Nutrition

বিড়ালের দৈহিক বিকাশ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করার জন্য বিড়ালকে অবশ্যই প্রতিদিন খাদ্য এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে হবে। বাজারে বিড়ালের খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য অসংখ্য খাদ্য রয়েছে। নিন্মে বিড়ালের জন্য কয়েকটি পুষ্টিকর এবং ভালো মানের খাদ্যের নাম উল্লেখ করা হলোঃ  

Advance Itchy cat 

Advance Itchy Cat হলো বিড়ালের একটি সুস্বাদু খাবার। এটি সমুদ্রের মাছের থেকে তৈরি করা হয়। এটিতে প্রোটিনের পাশাপাশি অন্যান্য সকল পুষ্টি রয়েছে যা বিড়ালের অতিরিক্ত ওজন রোধ করে থাকে। 

Ziwi Peak

উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ  মাংস থেকে প্রাকৃতিক ভাবে Ziwi Peak খাবারটি তৈরি করা হয়। এটি বিড়ালের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে থাকে।  

Fekube Natural

বিড়ালের জন্য ভালো এবং উন্নত মানের একটি খবার হলো Fekube Natural এটি মাংস থেকে তৈরি করা হয়। এটিতে প্রকৃতিক উপাদান এবং উচ্চ মানের প্রোটিন থাকে। 

Royal Canin

বিড়ালদের জন্য রেগুলার একটি খাদ্য হলো Royal Canin. এটি বিড়ালদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। এটি বিড়ালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সক্রিয় ভাবে জীবনযাপনে সহায়তা করে। 

History

সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো রাশিয়ার স্থানীয় বনের বিড়াল এবং এগুলো দীর্ঘকাল যাবত সাইবেরিয়ার ঘন বনে বিদ্যমান রয়েছে। রাশিয়ার বাহিরে সর্বপ্রথম ১৮৬৪ সালে জার্মান বইয়ে সাইবেরিয়া থেকে আসা একটি লাল টোবোলস্ক, লম্বা কৈশিক বিড়ালের বর্ণনা করা হয়। পরবর্তীতে ১৮৮৯ এবং ১৮৯২ সালে হ্যারিসন ওয়েয়ারের একটি বইয়ে সাইবেরিয়ান বিড়ালের কথা উল্লেখ করা হয়। ১৮৯২ সালে বইটি সংস্করণের সময়ে ওয়েয়ার বিড়ালটিকে সাইবেরিয়ান বিড়াল হিসেবে উল্লেখ করেন। 

সাইবেরিয়ান বিড়ালের প্রথম পরিচয়ের সময়ে বিড়ালটি “রাশিয়ান লংহেয়ার” বিড়াল নামে পরিচিত ছিলো। বার্লিন প্রাচীরের পতন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির কারণে সাইবেরিয়ান বিড়ালের দ্বিতীয় প্রজন্ম বিশ্বের বাকি অংশে প্রবর্তিত হয় এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে সাইবেরিয়ান বিড়াল প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যায় ১৯৯০ সালে এবং ২০০২ সালে যুক্তরাজ্যে যায়। সাইবেরিয়ান বিড়ালটি সিএজএ, এসিএফ, সিসিএ, ফিফ দ্বারা স্বীকৃত।   

Appendix

সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো সাইবেরিয়ান ফরেস্ট বিড়াল বা মস্কো লং হেয়ার বিড়াল নামেও অনেক বেশি পরিচিত। সাধারণ লোকেরা তাদের পশম এবং তিনস্তরের কোট দেখে  অ্যালার্জনিক বিড়াল মনে করলেও এটি অ্যালার্জিমুক্ত একটি বিড়ালের জাত। অন্যান্য বিড়ালেরা পানি থেকে দূরে থাকলেও সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো পানি অনেক বেশি পছন্দ করে। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে সাইবেরিয়ান বিড়াল সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট এবং বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। এর পরেও যদি কোন তথ্য জানার থাকে তাহলে সেটি কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।  

Share with friends and families

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *