Oriental Shorthair Cats are The Playful, Intelligent, and Affectionate Cat That’s Perfect for You

ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালের একটি গৃহপালিত জাত। ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালের জাতগুলো সিয়ামিজ বিড়াল থেকে বিকাশিত হয়েছে তাই ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালগুলো সিয়ামিজ বিড়ালগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। সিয়ামিজ বিড়ালদের মতো ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালদের বাদামের মতো আকৃতির চোখ, ত্রিভুজাকার আকৃতির মাথা, বড় কান এবং পেশিবহুল শরীর রয়েছে। ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালদের জেনেটিক শিকড় থাইল্যান্ডে হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক এলাকার বেশ কিছু বিড়াল প্রজনন কারী দ্বারা বিকাশিত হয়েছিল। 

ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালগুলো দেখতে পাতলা চেহারার হলেও এরা অনেক বেশি খেলাধুলা পছন্দ করে এবং উচ্চ স্থান থেকে অনায়াসেই লাফ দিতে পারে। ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালগুলো স্নেহশীল, মজার এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের আধিকারী হওয়ার কারণে অনেকেই বাড়িতে ওরিয়েন্টাল বিড়ালগুলো পালন করে থাকে। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালের ইতিহাস, স্বাস্থ্য চিকিৎসা এবং যত্ন নিয়ে আলোচনা করা হবে।

About

ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালগুলো তাদের মার্জিত বৈশিষ্ট্য এবং কোটের ৩০০ টির বেশি রঙ বৈচিত্রের কোটের জন্য অনেক বেশি পরিচিত। এছাড়াও ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালগুলোর বেশ কিছু পরিচিতি রয়েছে। নিন্মে তা দেওয়া হলোঃ 

  • ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালদের কোটের চুলগুলো ছোট সাইজের হয়ে থাকে। 
  • ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালগুলো অনেক বেশি স্নেহশীল, কৌতুকপূর্ণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকে।
  • ওরিয়েন্টাল বিড়ালদের রংধনু বিড়াল নামেও ডাকা হয়
  • ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালদের ওজন ১২ পাউন্ড হয়ে থাকে।
  • একটা পূর্ণাঙ্গ ওরিয়েন্টাল শর্ট হেয়ার বিড়ালের দৈর্ঘ্য ১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। 
  • ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালদের কোটগুলো সাদা, কালো, ধুসর, বাদামী, কমলা এবং আরও ৩০০ বৈচিত্রপূর্ণ রঙের হয়ে থাকে।
  • ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালগুলোর চোখ সবুজ, নীল, সোনালী, হলুদ রঙের হয়ে থাকে। 

এছাড়াও ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালগুলোর কোট কঠিন, ছায়াযুক্ত এবং ট্যাবি প্যাটার্নসের হয়ে থাকে। 

Health and Treatment

ওরিয়েন্টাল বিড়ালদেরও সিয়ামিজ বিড়ালদের মতো বেশ কিছু জেনেটিক স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। নিন্মে ওরিয়েন্টাল বিড়ালদের স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা বিষয়ে বর্ণনা করা হলোঃ 

Amyloidosis

অ্যামাইলয়েডোসিস হলো সিয়ামিজ এবং ওরিয়েন্টাল বিড়ালদের একটি সাধারণ রোগ। বিড়ালের শরীরের ভিতরের অঙ্গগুলিতে অ্যামাইলয়েড নামক প্রোটিন জমা হলে বিড়ালের অ্যামাইলয়েডোসিস রোগটি হয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত হলে বিড়ালের ক্ষুধা হ্রাস পায়, প্রস্রাব বৃদ্ধি পায়, ওজন কমে যায়, ডায়রিয়া এবং বমি হয়। এই লক্ষ্যণ গুলো দেখা দিলে বিড়ালকে অবশ্যই ডাক্তারের নিকট নিয়ে যেতে হবে নয়তো এই রোগটি কিডনি এবং লিভারের অনেক বেশি ক্ষতি করবে। 

Hyperesthesia Syndrome

Hyperesthesia সিন্ড্রোম হল একটি বিড়ালদের একটি অস্পষ্ট রোগ। এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালেরা তাদের পিঠ, লেজ এবং অন্যান্য অঙ্গ কামড়ায় বা চাটতে থাকে। এছাড়াও এই রোগটি বিড়ালের স্নায়ু, স্নায়ুতন্ত্র এবং ত্বকের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালকে অবশ্যই ডাক্তারের নিকট নিয়ে যেতে হবে। 

lymphoma

লিম্ফোমা হলো বিড়ালদের ইমিউন সিস্টেমের কোষগুলোর ক্যান্সার। লিম্ফোমা রোগটি বিড়ালদের লিউকেমিয়ার সাথে যুক্ত থাকে তাই এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালের ক্যন্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। লিম্ফোমাতে আক্রান্ত বিড়ালের ওজন কমে যায়, তৃষ্ণা বেড়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট হয়। তাই বিড়ালের মধ্যে লিম্ফোমার লক্ষ্যণ দেখা দিলেই বিড়ালকে পশু চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে। সাধারণত টিকা প্রদানের মাধ্যমে লিম্ফোমা আক্রান্ত বিড়ালদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। 

Megaesophagus

মেগাসোফ্যাগাস হলো বিড়ালের এমন একটি স্বাস্থ্য সমস্যা যেটি বিড়ালের খাদ্যনালীকে প্রভাবিত করে। বিড়াল মেগাসোফ্যাগাস রোগের ফলে বিড়ালের খাদ্যনালী বড় হয়ে যায় এবং পাকস্থালী ঠিকমতো খাবার নাড়াচাড়া করতে পারে না। এই রোগে আক্রান্ত হলে বিড়াল খেতে কষ্ট হয় হয়, খাবার গিলার সময় গুরুগুড় করে, অত্যাধিক লালা বের হয়, খাওয়ার সময়ে কাশি হয় এবং বিড়ালের নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলেই বিড়ালকে চিকিতসকের নিকট নিয়ে যেতে হবে। যদি সঠিক সময়ে এই রোগের চিকিৎসা না করা হয় তাহলে অ্যাসপেরিশন নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

Care

বিড়ালের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং বিড়ালকে রোগ মুক্ত রাখার জন্য অবশ্যই বিড়ালের যত্ন নিতে হবে। নিন্মে ওরিয়েন্টাল বিড়ালে যত্ন সম্পর্কে বর্ণ্না করা হলোঃ 

  • ওরিয়েন্টাল বিড়ালের কোটের চুলগুলো অনেক সিল্কি এবং ছোট সাইজের হয়ে থাকে তাই এটির তেমন রক্ষনাবেক্ষণের প্রয়োজন নেই। তবে বিড়ালের আগলা চুল অপসারন করতে এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে মাঝে মাঝে ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালকে দাঁতের ও মাড়ির রোগ থেকে রক্ষা করতে দাঁত পরিষ্কার করতে হবে। 
  • বিড়ালের নখগুলো পরিষ্কার রাখতে নখ ছাটতে হবে। 
  • বিড়ালদের কানে অনেক ধরণের রোগ হয়ে থাকে। তাই কানের রোগ থেকে বিড়ালকে সুরক্ষিত রাখতে বিড়ালের কান পরিষ্কার করতে হবে। 
  • ওরিয়েন্টাল বিড়ালগুলো খেলতে এবগ আরোহন করতে অনেক বেশি পছন্দ করে তাই বিড়ালের শারীরিক সুস্থতার জন্য বিড়ালকে খেলার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। 

এছাড়া বিড়ালকে প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী খাদ্য দিতে হবে। বিড়ালকে প্রচুর পরিমাণে পান করাতে হবে।   

Food and Nutrition

অন্যান্য বিড়ালদের মতো ওরিয়েন্টাল বিড়ালদেরও খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং ভারী খাবার সরবারহ করতে হবে। বিড়ালের সুস্থতার জন্য বিড়ালকে শুকনা, ভেজা বা ঘরের তৈরি যে ধরণের  খাবারই প্রদান করা যেতে পারে শুধু খেয়াল রাখতে হবে খাদ্য গুলোতে যেন, প্রোটিন বেশি থাকে, কার্বোহাইড্রেড কম থাকে এবং চর্বি পরিমিত পরিমাণে থাকে। নিন্মে ওরিয়েন্টাল বিড়ালদের খাদ্যের বর্ণনা দেওয়া হলোঃ 

Feline Naturals

বিড়ালদের জন্য একটি অন্যতম এবং সেরা ভেজা খাবার হলো ফেলাইন ন্যাচারাল। এটি বন্য মুরগির মাংস থেকে তৈরি করা হয়। এটিতে মাংসের পরিমাণ বেশি থাকে, কার্বোহাইড্রেড কম এবং শস্যমুক্ত থাকে। এটি সকল বয়সের বিড়ালের জন্য উপযুক্ত একটি খাবার।  

Oisong Epigen Go

বিড়ালের জন্য সেরা শুকনো খাবার হলো ওইসং এপিজেন গো। এটি একটি আল্ট্রা হাই প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি খাবার। এটিতে ৬৩% প্রোটিন সহ প্রোবায়োটিকস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ভিটামিন এবগ খনিজলবণ রয়েছে। এটি বিড়ালের সুস্থতা নিশ্চিত করে, শক্তি বৃদ্ধি করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বিড়ালের অতিরিক্ত ওজন হ্রাস করে। 

Dr. LC’s CleanProtein

বিড়ালের জন্য আরেকটি সেরা শুকনো খাবার হলো ডঃ এলসির ক্লিনপ্রোটিন। এটি মুরগির মাংস থেকে তৈরিকৃত  উচ্চ-প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি খাবার। এটিতে ৯০% এর বেশি একটি স্বাস্থ্যকর প্রোটিন থাকে। এটি বিড়ালদের ক্ষুধা নিবারণ করার পাশাপাশি বিড়ালের হজম এ সাহায্য করে শরীররে ওজন নিয়ন্ত্রন করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 

Vital Essential Mini Patties

 বিড়ালের জন্য সেরা ফ্রিজ-শুকনো কাঁচা খাবার হলো ভাইটাল এসেনশিয়াল মিনি প্যাটিস। এটি প্রোটিন দিয়ে প্যাক করা একটি খাবার। এটি বিড়ালকে প্রাকৃতিকভাবে উপস্থিত ভিটামিন এবং খনিজলবনের চাহিদা পূরণ করে। এটি বিড়ালের পেশি শক্তিশালী করে , প্রাকৃতিক ভাবে হজম এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে। 

History

১৮০০ শতকের শেষের দিকে সিয়ামিজ বিড়ালগুলোকে থাইল্যান্ড থেকে যুক্তরাজ্যে আমদানি করা হয়। সিয়ামিজ বিড়ালগুলো ইউরোপে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পরে এবং অনেক বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে। সিয়ামিজ বিড়ালদের প্রজনন শুরু করা হলে কিছু কিছু বিড়াল সিয়ামিজ থেকে ভিন্ন আকৃতির হয়ে যায়। আর সিয়ামিজ বিড়ালগুলোর নিবন্ধন করার সময়  সুক্ষ্ম বিড়ালগুলোকে সিয়ামিজ হিসবে নিবন্ধিত করা হয় এবং অন্যগুলোকে নন-ব্লু আইড সিয়ামিজ বা বেদেশী শর্টহেয়ার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। 

১৯৭৭ সালে সিএফএ চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতার জন্য ওরিয়েন্টাল বিড়ালগুলো প্রাচ্যের শর্টিহেয়ার নামে একটি প্রাকৃতিক বিড়ালের জাত হিসেবে গৃহীত হয়। এর দুই দশক পরে ১৯৯৭ সালে জিসিসিএফ দ্বারা ওরিয়েন্টাল বিড়ালের জাতটিকে স্বীকৃত প্রদান করা হয়। বর্তমানে ফিফ, এসিএফ এবং টিআইসিএ দ্বারাও এই জাতটি স্বীকৃত।  

Appendix

ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালগুলো সবচেয়ে বুদ্ধিমান, বৈচিত্রময় এবং কৌতূহলী বিড়ালদের মধ্যে একটি অন্যতম বিড়ালের জাত। ওরিয়েন্টাল শর্টহেয়ার বিড়ালগুলো খুব সহজেই পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ এবং পরিবারের অন্যান্য প্রাণীদের সাথে মিশে যায় এবং তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচারণ করে থাকে। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে ওরিয়েন্টাল বিড়ালের সকল খুটিনাটি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। এর পরেও যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সেটি কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। 

Share with friends and families

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *