Munchkin Cats are The Cats that will make your Life more Fun.

মুঞ্চকিন বিড়াল হলো গৃহপালিত বিড়ালদের একটি প্রাকৃতিক জাত যাদের জেনেটিক মিউটশেসনের কারণে পা গুলি ছোট হয়ে থাকে।  অন্যান্য বিড়ালের প্রজাতির তুলনায় একটি একটি নতুন বিড়ালের জাত। এটি ১৯৪০ সালে প্রথম নিবন্ধন করা হয়েছে এবং ১৯৯১ সালে স্বীকৃত হয়েছে। মুঞ্চকিন বিড়ালগুলো তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ এবং উদ্যমী ব্যক্তিত্বের কারণে অনেকের কাছে পছন্দের বিড়াল। 

মুঞ্চকিন বিড়ালগুলোকে তাদের দৌড়ানোর ধরণ এবং ছোট পা গুলোর জন্য কখনও ফেরেটের সাথে তুলনা করা হয়। সকল প্রজাতির গৃহপালিত বিড়ালের জাতের সাথেই মুঞ্চকিন বিড়ালের প্রজনন করানো যায়। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে মুঞ্চকিন বিড়ালগুলোর স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, যত্ন এবং ইতিহাস সম্পর্কে একটি বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।    

About

মুঞ্চাকিন বিড়ালগুলো সাসেজ বিড়াল নামেও পরিচিত। মুঞ্চাকিন নামটি এসেছে লেখক এল ফ্রাঙ্ক বাউমের ১৯৯০ সালে প্রকাশিত হওয়া দ্য ওয়ান্ডারফুল উইজার্ড অফ ওজ উপন্যাসে উল্লেখিত  মুনচকিন দেশের ক্ষুদ্র বাসিন্দাদের থেকে। এছাড়াও মুঞ্চাকিন বিড়ালদের আরও বেশ কিছু পরিচিতি রয়েছে। নিন্মে এগুলো দেওয়া হলোঃ 

  • মুঞ্চকিন বিড়ালগুলো সাধারণত বন্ধুতেপূর্ণ, উদ্যমী এবং কৌতুকপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারি হয়ে থাকে।
  • একটি পূর্ণাঙ্গ মুঞ্চকিন বিড়ালের ওজন ৯ পাউন্ড অব্দি হয়ে থাকে। 
  • মুঞ্চকিন বিড়ালগুলোর দৈর্ঘ্য ১৮ ইঞ্চি অব্দি হয়ে থাকে। 
  • মুঞ্চকিন বিড়ালের কোট রংধনুর যেকোন রঙের হতে থাকে। 
  • মুঞ্চকিন বিড়ালগুলোর চোখ নীল, বাদামী, তামা, সবুজ এবং হলুদ রঙের হয়ে থাকে। 
  • একটি মুঞ্চকিন বিড়ালের জীবনক্লা ১৫ বছর অব্দি হয়ে থাকে। 

এছাড়াও মুঞ্চকিন বিড়ালগুলোর কোটগুলো সলিড, ট্যাবি, ক্যালিকো এবং দ্বিবর্ণের হয়ে থাকে। 

Health and Treatment

মুঞ্চকিন বিড়লগুলো প্রাকৃতিক বিড়ালের জাত। তাই এদের জিনগত স্বাস্থ্যসমস্যা থাকে না। তবে অন্যান্য বিড়ালের জাতগুলোর মতো মুঞ্চকিন বিড়ালদেরও বেশ কি স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। নিন্মে মুঞ্চকিন বিড়ালের স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা নিয়ে বর্ণনা করা হলোঃ 

Lordosis

লর্ডোসিস হলো মুঞ্চকিন বিড়ালদের একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি হলে বিড়ালের পিঠের নীচের মেরুদন্ড বেকে যায়। এই রোগে আক্রান্ত হলে বিড়ালকে অবশ্যই ডাক্তারের নিকট নিয়ে যেতে হবে। মুঞ্চকিন বিড়ালদের জন্য এটি একটি সংবেদশীল স্বাস্থ্য সমস্যা।  এটি সাধারনত মেরুদন্ডের পেশি খুব ছোট হওয়ার কারণে হয়ে থাকে।  

Osteoarthritis

অস্টিওআর্থারাইটিস হলো এমন একটি স্বাস্থ্য সমস্যা যেটা বিড়াল মানুষ উভয়েরই  হয়ে থাকে।অস্টিওআর্থারাইটিস একটি অবক্ষয়জনিত রোগ এটি কারণে বিড়ালের জয়েন্টগুলোর টিস্যু ভেঙে যায়। এটিতে আক্রান্ত বিড়ালের চলফেরা পরিবর্তন হয়, বিড়ালেরা পঙ্গুর মতো আচারণ করে। এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলেই বিড়ালকে পশু চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যেতে হবে। সাধারণত ওজন ব্যবস্থাপনা, ঔষুধ,শারীরিক থেরাপি এবং পরিবেশগত পরিবর্তনের মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়।  

Hyperthyroidism

হাইপারথাইরয়েডিজম হলো বিড়ালের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের  অতিরিক্ত উৎপাদ। হাইপারথাইরয়েডিজম বয়স্ক বিড়ালদের একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালের ওজন হ্রাস পায় এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। এই রোগের লক্ষণগুলো দেখা দিলেই বিড়ালকে পশু চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যেতে হবে। এই রোগের সময় মতো চিকিৎসা না করা হলে উচ্চ রক্তচাপ, হাইরোটক্সিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি হওয়ার সম্ভাবন থাকে। সাধারণত মৌখিক ঔষুধ, তেজস্ক্রিন আয়োডিন থেরাপি, একটি প্রেসক্রিপশন ডায়েট এবং সার্জিরির মাধ্যমে এটির চিকিৎসা করা হয়।  

Pancreatitis

প্যানক্রিয়াটিইস বিড়ালের অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ জনিত একটা স্বাস্থ্য সমস্যা। অন্যান্য বিড়ালদের তুলনায় মুঞ্চকিন বিড়ালদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এই রোগে আক্রান্ত হলে বিড়ালদের বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, পেট ব্যাথা এবং ক্ষুধা হ্রাসের মতো লক্ষণ দেখাঁ যায়। এই রোগের লক্ষণ গুলো দেখা দিলেই বিড়ালকে ডাক্তারের নিকট নিয়ে যেতে হবে এবং চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।   

Care

বিড়ালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা এড়াতে অবশ্যই যত্ন নিতে হবে। নিন্মে মুঞ্চকিন বিড়ালের যত্ন নেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলোঃ 

  • মুঞ্চকিন বিড়ালগুলোর পা ছোট হওয়ার কারণে তাদের জিহ্বা কোট অব্দি পোছায় না। তাই এই বিড়ালদের কোট সুন্দর রাখতে প্রতি সপ্তাহে ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালকে প্রতি সপ্তাহে একবার নখ কেটে দিতে হবে। 
  • বিড়ালের দাঁত ও মাড়ির রোগ থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই বিড়ালকে প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালের কানে ময়লা জমে কানে কম শোনা বধির হয়ে যাওয়া রোগ হয়ে থাকে। তাই কানকে পরিষ্কার করতে হবে। 
  • এই বিড়ালের পা গুলো ছোট হলেও এদের দৌড়াতে বা খেলতে কোন সমস্যা হয় না তবে এরা লাফ দিতে পারে না। তাই এদের খেলার জন্য খেলনা কিনে দিতে হবে। 

এছাড়াও বিড়ালদের নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী খাবার দিতে হবে। বিড়ালকে পর্যাপ্ত পানি পান করাতে হবে। 

Food and Nutrition

বিড়ালের সঠিক বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা রাখার জন্য অবশ্যই বিড়ালকে স্বাস্থ্যকর খাদ্য দিতে হবে। নিন্মে মুঞ্চকিন বিড়ালের খাদ্য নিয়ে বর্ণনা করা হলো 

Open Farm Chicken & Salmon Blend Wet Cat Food

বিড়ালের জন্য একটি অন্যতম সেরা খাবার হলো Open Farm Chicken & Salmon Blend Wet Cat Food. এটিতে প্রোটিন৪৪%,  চর্বি:৩৩.৩৩%, ফাইবার১১.১১%, শর্করা১১.১১%। এই সকল স্তরের বিরালদের জন্যই একই উপযুক্ত শুকনো খাবার। এটি টিনজাত খাবার হওয়ার কারণে এটার মধ্যকার আদ্রতা অনেক বেশি দিন অব্দি সতেজ থাকে। 

Ziwi Peak Lamb Recipe Canned Cat Food

সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি বিড়ালের জন্য একটু সুস্বাদু খাবার হলো Ziwi Peak Lamb Recipe Canned Cat Food. এটিত মাংস সোয়াবিন গম দিয়ে তৈরিত। এটিতে প্রোটিন শতকরা ৪৩% , চর্বি ২৭% ফাইবার ৯% এবং শর্করা থাকে ৬%। বিড়ালদের ভেজা খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা খাবার Ziwi Peak Lamb Recipe Canned Cat Food

CANIDAE Grain-Free PURE Limited Ingredient Chicken Recipe Dry Cat Food

বিড়ালছানাদের জন্য বাজারের সেরা খাবারটি হুলো CANIDAE Grain-Free PURE Limited Ingredient Chicken Recipe Dry Cat Food. এটি রয়েছে প্রোটিন ৩৫%, চর্বি ১৮%, ফাইবার ৩% এবং আদ্রতা ৯%। এটি বিড়ালের এলার্জির ঝুকি কমায় এবং এটিতে রয়েছে মানসন্মত পশু প্রোটিনের বিভিন্ন উৎস। এছাড়াও এই খাবারটির সাথে চিলেটেড খনিজ এবং প্রোবায়োটিক রয়েছে।  

Tiki Cat Hana Grill Ahi Tuna with Crab in Tuna Consomme Grain-Free Canned Cat Food

বিড়ালের অত্যন্ত পছন্দের একটি খাবারের নাম হলো Grain-Free Tiki Cat  Ahi Tuna & Crab Recipe 

Cat Food. এটি প্রিমিয়াম গ্রেডের জৈব উপাদান থেকে তৈরি একটি খাবার। এটি প্রোটিন এবং চর্বি সমৃদ্ধ একটি খাবার। এটিতে প্রোটিন ১৮% চর্বি ২% জৈব পদার্থ ২% এবং আদ্রতা ৭৭% রয়েছে। 

History

মুঞ্চকিন বিড়ালগুলো জিনগত কারণে প্রাকৃতিক ভাবে ছোট পায়ের বিড়াল। ১৯৪০ সালে ছোট পায়ের বিড়ালদের সারা বিশ্বজুরে বহুবার নথিভুক্ত করা হয়েছে। ১৯৪৪ সালে একটি ব্রিটিশ ভেটোরিনারি রিপোর্টে চার প্রজন্মের খাটো পায়ের বিড়ালদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলোর পায়ের দৈর্ঘ্য ছাড়া বাকি সবকিছু সাধারণ বিড়ালদের মতই ছিলো। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ছোট পায়ের বিড়ালগুলো হারিয়ে গেছিলো কিন্তু ১৯৬৫ সালে রাশিয়া এবং ১৯৭০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছোট পায়ের বিড়ালগুলো দেখা যায়। ১৯৮৩ সালে লুইসিয়ানা রেভিলের একজন সঙ্গীত শিল্পী স্যান্ড্রা হোচেনেডেল দুইটি গর্ভবতী বিড়ালকে খুজে পান। বিড়ালগুলো বাচ্চা প্রসব করলে অর্ধেক বিড়ালছানাগুলোর পা ছোট হয়। তিনি ছোট পায়ের বিড়ালছানাদের নাম দেন ব্ল্যাকবেরি এবং টুলুজ।ব্ল্যাকবেরি এবং টুলুজের থেকেই জন্ম হয় আজকের মুঞ্চকিন বিড়ালের জাতটি। 

১৯৯১ সালে ডেভিস ওকলাহোমায় দ্য ক্যাট অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা আয়োজিন বিড়ালের অনুষ্ঠানে মুঞ্চকিন বিড়ালকে প্রদর্শিত করেন। ১৯৯৪ সালে টিআইসিএ তাদের নতুন ব্রিড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে মুঞ্চকিন বিড়ালকে স্বীকৃত প্রদান করে। ২০০৩ সালের মে মাসে মুঞ্চকিন বিড়ালের জাতটি টি আর সি এ চ্যাম্পিয়নশিপের মর্যাদা লাভ করে।

 

Appendix

মুঞ্চকিন বিড়ালগুলো বুদ্ধিমান এবং বন্ধুত্বপূর্ণ একটি বিড়ালের জাত। এরা ছোট পায়ের অধিকারী হলেও যেকোনো পরিবারের সাথে খুব সহজেই মিশে যেতে পারে। মুঞ্চকিন বিড়ালগুলোর ছোট পা হওয়ার কারনে এরা উঁচু স্থানে আহোরণ কিংবা লাফ দিতে পারে না। যাদের কিউট এবং বুদ্ধিমান বিড়াল অনেক বেশি পছন্দ তাদের জন্য মুঞ্চকিন বিড়ালগুলো হলো আদর্শ বিড়াল। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে মুঞ্চকিন বিড়ালের সকল খুটিনাটি তথ্য জানতে পেরেছেন। এর পরেও যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সেটি কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। 

Share with friends and families

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *