Maine Coon Cats are The Intelligent and Affectionate Cats That Will Be Your Best Friend

বিড়ালের গৃহপালিত জাতগুলোর মধ্যে মেইন কুন একটি জনপ্রিয় জাত। এটি উত্তর আমেরিকার প্রাচীনতম প্রাকৃতিক বিড়ালগুলোর মধ্যে একটি বিড়ালের জাত। এটি বিড়ালগুলোর উৎপত্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেইন রাজ্যে। মেইনকুন বিড়ালগুলো মেইন রাজ্যের সরকারী বিড়াল। মেইনকুন বিড়ালগুলোর বড় আকার এবং সামাজিক ব্যাক্তিত্বের জন্য এরা ভদ্র দৈত্য হিসেবেও পরিচিত। 

মেইন কুন বিড়ালগুলোর বড় আকার এবং ঘন পশমের কারণে এই বিড়ালগুলো কঠোর জলবায়ুতের বেচে থাকতে পারে। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে মেইন কুন বিড়ালের স্বাস্থ্য সমস্যা, চিকিৎসা ইতিহাস ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।  

About

মেইন কুন বিড়ালদের বড় সাইজ, বুদ্ধিমান, কোমল  এবং সামাজিক ব্যাক্তিত্বের কারণে এই বিড়ালগুলো কুকুরের মতো স্বভাবের বিড়ালও বলা হয়। এছাড়াও এই বিড়ালগুলোর আরও বেশ কিছু পরিচিতি রয়েছে। নিন্মে সেগুলো দেওয়া হলোঃ 

  • মেইন কুন বিড়ালদের অপর নাম হলো কোমল দৈত্য। 
  • মেইনকুন বিড়ালগুলো বন্ধুত্বপূর্ণ, ভদ্র এবং কুকুরদের মতো ব্যক্তিত্বের হয়ে থাকে। 
  • মেইনকুন বিড়ালদের ওজন ৯ থেকে ১৮ পাউন্ডের হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু পুরুষ মেইনকুন বিড়ালদের ওজন ২০ পাউন্ডের বেশি হয়ে থাকে। 
  • মেইনকুন বিড়ালদের দৈর্ঘ্য ১৯ থেকে ৩০ ইঞ্চি অব্দি লম্বা হয়ে থাকে। 
  • মেইনকুন বিড়ালগুলোর কোট ভারী এবং এলোমেলো টাইপের হয়ে থাকে। 
  • মেইনকুন বিড়ালগুলো কোট গুলো বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। সাদা কালো নীল লাল ক্রিম ইত্যাদি। 

এছাড়াও মেইনকুইন বিড়ালদের চোখগুলো সাধারণত সবুজ, তামাটে, নীল এবং সোনালী রঙের হয়ে থাকে।

  

Health and Treatment

মেইন কুন বিড়ালগুলো খুব শক্ত প্রজাতির বিড়াল হিসেবে পরিচিতি। তবে অন্যান্য বিড়ালদের মতো মেইনকুন বিড়ালদেরও বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। নিন্মে মেইনকুন বিড়ালের কয়েক প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা এবং চিকিৎসা নিয়ে বর্ণনা করা হলোঃ 

Hip dysplasia

মেইনকুন বিড়ালদের একটি সাধারণ রোগ হলো হিপ ডিসপ্লাসিয়া। বিড়াল এই রোগে আক্রান্ত হলে বিড়ালের জয়েন্টগুলো শিথিল হয়ে যায় এবং বিড়ালের স্তনের জয়েন্টগুলোতে অনেক বেশি ব্যাথা অনুভব হয়। এই লক্ষণ গুলো দেখা দেওয়া মাত্রই বিড়ালকে চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যেতে হবে নয়তো বিড়ালের আরও বেশি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। 

Spinal Muscular Atrophy

স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রোফি হলো মেইনকুন বিড়ালদের একটি জেনেটিক রোগ। এটি মেইনকুন বিড়ালছানাদের জীবন কাল কমিয়ে দেয়। এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালেরা অস্বাভাবিক ভঙ্গি প্রদর্শন করে, বিড়ালেরা লাফ দেওয়ার সময়ে ব্যথা অনুভব করে এবং চলাফেরার সময়ে পছিনের অংশটুকু দোল খায়। এই লক্ষণ গুলো দেখাঁ দিলে অবশ্যই ডক্তারের নিকট নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা প্রদান করতে হবে। 

Stomatitis

স্টোমাটাইটিস হলো বিড়ালে একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা এটি পুরুষ মহিলা উভয় বিড়ালদেরই হয়ে থাকে। স্টোমাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হলে বিড়ালের মুখে এবং মাড়িতে বেদনাদায়ক ঘা হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে বিড়ালের ওজন হ্রাস পায়, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হয়, ক্ষুধা হ্রাস পায় এবং মুখে মাড়িতে ঘা পরিলক্ষিত হয়। এই লক্ষনগুলো দেখা দিলেই বিড়ালকে চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যেতে হবে এবং ঔষধ সেবন করাতে হবে। 

Polycystic Kidney

বিড়ালের বংশগত রোগের মধ্যে অন্যতম একটি হলো পলিসিস্টিক কিডনি রোগ। এই রোগে আক্রান্ত  বিড়ালগুলো জন্মের সাথেই কিডনিতে সিস্ট নিয়ে জন্মায়। বিড়ালের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সিস্টের আকারও বৃদ্ধি পায়। সাধারণত এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালের ওজন কমে যায়, তৃষ্ণা বেড়ে যায়, ক্ষুধা হ্রাস পায়, বমি হয় এবং বিড়ালের অলসতা বৃদ্ধি পায়। এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলেই বিড়ালকে পশু চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যেতে হবে। আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে এই রোগকে সনাক্ত করা হয়। 

Care

বিড়ালের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে বিড়ালকে অবশ্যই নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। নিন্মে মেইন কুন বিড়ালের যত্ন   নেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করা  হলোঃ 

  • মেইন কুন বিড়াল গুলো আকারে লম্বা এদের কোটটি সিল্কি এবং সামান্য তৈলাক্ত তাই বিড়ালটি খারাপ আবহাওয়াতেও ভালো থাকে। কোটটিকে প্রতি সপ্তাহে একবার ব্রাশ করাতে হবে। 
  • মেইন কুন বিড়ালগুলো যেহেতু বড় আকারের বিড়াল তাই এটিতে মাঝে মধ্যে গোসল করাতে হবে। 
  • বিড়ালের নখগুলোকে পরিষ্কার রাখতে প্রতি সপ্তাহে নখ কাটতে হবে।
  • বিড়ালের বধির হওয়া সমস্যা থেকে রক্ষা করতে প্রতি সপ্তাহে কান পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং সেই সাথে কানের মধ্যে ময়লা থাকলে তা পরিষ্কার করতে হবে। 
  • মেইন কুন বিড়ালগুলো কুকুরদের মতো সক্রিয় বিড়াল। তাই এদের কে খেলনা কিনে দিতে হবে। 

এছাড়াও বিড়ালকে প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী খাবার খেতে দিতে হবে। বিড়ালকে বেশি পরিমানে পানি খেতে দিতে হবে।   

Food and Nutrition

বিড়ালের সঠিক বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অবশ্যই বিড়ালকে খাদ্য এবং পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে। বাজারে অনেক রকমে বিড়ালের খাবার কিনতে পাওয়া। নিন্মে বাজারের সেরা কয়েকটি খাবারের নাম দেওয়া হলোঃ

Royal Canin Maine Coon Breed Adult Dry Cat Food

মেইন কুন বিড়ালের জন্য সেরা শুকনো খাবার হলো Royal Canin Maine Coon Breed Adult Dry Cat Food. এটিতে বিড়ালের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ভিটামিন এবং খনিজ লবণ রয়েছে। এটিতে বোরেজ অয়েল, ইপিএ, ডিএইচে রয়েছে যা, বিড়ালের পশম নরম এবং চকচকে রাখতে সহায়তা করে। এটিতে Glcosamine এবং Chondroitin রয়েছে যেটি বিড়ালের জয়েন্টগুলো মজবুত করে। এটি তে গ্রিন টি নির্যাস থাকার কারণে বিড়ালের শ্বাস প্রশ্বাসের দুর্গন্ধ হওয়া বন্ধ করে। 

Meowing Heads

বিড়ালের জন্য অন্যতম এবং দুর্দান্ত একটি শুকনো খাবার হলো মেউইং হেডস। এটিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন যা বিড়ালের সুস্থ বৃদ্ধির কাজে ভূমিকা পালন করে থাকে। এটি ডাক্তারদের অনুমোদিত একটি খাবার।এটি সম্পূর্ণ ১০০% প্রাকৃতিকভাবে সালমন এবং মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি। এটি হাজমে সাহায্য করে এবং বিড়ালের চুল পড়া প্রতিরোধ করে। 

Iams Proactive Health Adult Indoor Weight & Hairball Control

Iams Proactive Health বড় বিড়ালদের জন্য একটি সুষম শুকনা খাবার। এটি মেইন কুন বিড়ালদের জন্য আদর্শ একটি খাবার। এটিতে টাউরিন থাকে যা বিড়ালের হার্টকে সুস্থ রাখে এছাড়া এটিতে বিদ্যমান ওমেগা ৩ এবং ওমেগা ৬ বিড়ালদের কোট চকচকে রাখতে এবং ত্বক কে সতেজ রাখতে অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে। 

History

মেইনকুন বিড়ালগুলো উত্তর-পূর্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাকৃতিকভাবে বিকাশিত হওয়া একটি বিড়ালের জাত। যদি অনেকেই মনে করেন যে, মেইন কুনের বংশবৃদ্ধি করা হয়েছে ববক্যাট এর থেকে। মেইনকুন বিড়ালগুলো স্বতন্ত্র শারীরিক চেহারা এবং অসাধারণ শিকার দক্ষতার জন্য অনেক বেশি জনপ্রিয়। 

একটি সাহিত্যমর্মে মেইন কুন বিড়ালের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৮৬১ সালে ফ্রান্সেস সিম্পসনের দ্য বুক অফ দ্য ক্যাট বইয়ে।  ৮ই মে ১৮৯৫ সালে নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত প্রথম আমেরিকান ক্যাট শোতে কসি নামের এক মহিলা মেইন কুন ট্যাবি বিড়াল প্রদর্শন করেছিলেন। ২০২০ সালে বিশ্বের তৃতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় পেডিগ্রি বিড়ালের প্রজাতি হিসেবে মেইককুন বিড়াল নির্বাচিত হয়েছে।  এটি সিএফএ, ফিফ, টিআইসি, এসিএফ, জিসিসিএফ দ্বারা স্বীকৃত একটি বিড়ালের জাত। 

Appendix

মেইনকুন বিড়ালগুলো অনেক বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ, স্থীর মেজাজের এবং মিশুক প্রকৃতির বিড়াল। এই বিড়ালগুলো মানুষের খুব কাছাকাছি থাকতে অনেক বেশি পছন্দ করলেও তারা খুব বেশি আকড়ে থাকে না এবং কোলে থাকে না। মেইনকুন বিড়ালগুলোর ৪ বছর সময় লাগে তাদের পূর্ণ বৃদ্ধির জন্য। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে মেইনকুন বিড়ালের সকল খুটিনাটি বিষয়গুলো জানতে পেরেছেন। এর পরেও যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।  

Share with friends and families

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *