Korat Cat are The Loyal and Devoted Companions That Will Love You Unconditionally

প্রাচীনতম এবং স্থিতিশীল একটি প্রাকৃতিক বিড়ালের জাত হলো কোরাত বিড়াল।এই বিড়ালটির নামকরণ করা হয়েছে বিড়ালটির উৎপত্তিস্থান ফিমাই, থাইল্যান্ডের একটি প্রদেশ “নাখোন রাতচাসিমা” (কোরাত) এর নাম অনুসারে। থাইল্যান্ডে এই বিড়লটি সি সাওয়াত নামেও পরিচিত, যেটির অর্থ হলো সাওয়াত বীজের রঙ।

থাইল্যন্ডে কোরাত বিড়ালকে “সৌভাগ্য বিড়াল” বলা হয়। কোরাত বিড়ালগুলোর বুদ্ধিমান, সামাজিক, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং স্নেহময় ব্যক্তিত্বের জন্য অনেকের কাছেই গৃহপালিত বিড়ালদের মধ্যে এটি একটি পছন্দের বিড়ালের জাত। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে কোরাত বিড়লের স্বাস্থ্য চিকিৎসা খাদ্য এবং ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।     

About

কোরাত বিড়ালগুলো তাদের স্বতন্ত্র রুপালী, নীল-ধুসর কোট এবং হৃদয় আকৃতির চেহারার জন্য অনেক বেশি পরিচিত। এছাড়াও তাদের বেশ কিছু পরিচিত রয়েছে। নিন্মে কোরাত বিড়ালের পরিচিতি বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলোঃ 

  • কোরাত বিড়ালগুলো তাদের বুদ্ধিমান, সামাজিক, স্নেহময় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকে। 
  • কোরাত বিড়ালদের ওজন ৬ থেকে ১০ পাউন্ডের হয়ে থাকে। 
  • কোরাত বিড়ালগুলোর দৈর্ঘ্য ১৫ থেকে ১৮ ইঞ্চির হয়ে থাকে। 
  • কোরাত বিড়ালগুলোর কোটগুলো রুপালী এবং নীল-ধূসর রঙের হয়ে থাকে। 
  • কোরাত বিড়ালগুলোর চোখগুলো সবুজ রঙের হয়ে থাকে। 

এছাড়াও কোরাত বিড়ালগুলো গড় আয়ুস্কাল ১৫ থেকে ১৯ বছর হয়ে থাকে। এদের কোটের চুলগুলো ছোট হয়ে থাকে। 

 

Health and Treatment

অন্যান্য বিড়ালদের মতো কোরাত বিড়ালদেরও বেশকিছু স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। কোরাত বিড়ালগুলোর বেশ কিছু বংশগত স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। নিন্মে কোরাত বিড়ালদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সম্পর্কে একটি বিস্তারিত বর্ণনা করা হলোঃ 

Arterial Thromboembolism

হৃধরোগে আক্রান্ত বিড়ালদের একটা সাধারণ সমস্যা হলো ধমনীতে রক্ত জমাট বাধা। যেটিকে বলা হয় ফেনাইল আর্টিক থ্রম্বোইম্বোলিজম। এটিতে আক্রান্ত হলে বিড়ালের শরীরের পিছনের পা অবশ হয়ে যায় এবং পা ব্যাথা করে। এই লক্ষন গুলো দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যেতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবনের মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করা যায়। 

Lysosomal Storage Disease (LSD)

বিড়ালদের জেনেটিক একটি স্বাস্থ্য সমস্যার নাম হলো লাইসোসোমাল স্টোরেজ ডিজিজ। এটি শরীরের বিপাকীয় কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইমগুলোর গঠনে বাধা দেয়। এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালের স্বাভাবিক ভারসাম্যের অভাব, দুর্বল দৃষ্টি, অস্বাভাবিক মস্তিষ্কের আচারন, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো অসংখ্য লক্ষণ দেখা যায়। সাধারণত এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালগুলো জন্মের সময়ে স্বাভাবিক থাকলেও কয়েক মাস পরেই এই লক্ষণ গুলো দেখা দেয়। বিড়ালের এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যেতে হবে। বিড়ালের জন্য এটি একটি সর্বোচ্চ মারাত্মক রোগ। 

Hyperthyroidism

বিড়ালের শরীরের অতিরিক্ত থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন হয়ে থাকে পাইপারথাইরয়েডিজম রোগের কারনে। এটি সাধারনত বয়স্ক বিড়ালদের মধ্যে বেশি প্রবনতা দেখা য্যা। এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালদের ওজন হ্রাস পায় এবং ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। এই রোগের লক্ষণ গুলো দেখা দিলে অবশ্যই বিড়ালকে পশু চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যেতে হবে। সাধারণত খাবার, তেজস্ত্রিয় আয়োডিন থেরাপি, সার্জারি এবং প্রোপার ডায়েট এর মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। 

Care

বিড়ালকে বিভিন্ন রোগ থেকে বাচাতে অবশ্যই নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। নিন্মে কোরাত বিড়ালের যত্নের বিষয়গুলোকে বর্ণ্না করা হলোঃ 

  • কোরাত বিড়ালগুলো পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটাতে অনেক বেশি পছন্দ করে। তাই বিড়ালের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে অবশ্যই বিড়ালের সাথে সময় কাটাতে হবে। 
  • কোরাত বিড়ালগুলো পরিবারের মানুষদের সাথে খেলতে অনেক বেশি পছন্দ করে। তাই প্রতি বিড়ালকে খেলতে দিতে হবে। 
  • বিড়ালগুলো কোটের নীল পশমকে চকচকে রাখতে অবশ্যই সপ্তাহে এক থেকে দুই বার ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালের নখ পরিষ্কার রাখতে অবশ্যই নখগুলো কেটে ছোট করতে হবে। 
  • বিড়ালের দাঁত এবং মাড়ির রোগ থেকে মুক্তি দিতে অবশ্যই নিয়মিত ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালের কানের রোগ থেকে রক্ষা করতে সপ্তাহে অবশ্যই কান পরিষ্কার করতে হবে এবং পর্যবেক্ষণ করতে হবে। 

এছাড়াও, বিড়ালকে প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী খাবার দিতে হবে। বিড়ালকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি করাতে হবে।

  

Food and Nutrition

বিড়ালের সঠিক বিকাশ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই বিড়ালকে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। অন্যান্য বিড়ালদের মট কোরাত বিড়ালগুলোর জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি প্রয়োজন। বাজারে অসংখ্য বিড়ালের খবার পাওয়া যায়। নিন্মে বাজারের সেরা কয়েকটি বিড়ালের খাবারের নাম উল্লেখ করা হলোঃ 

Trendline Cat Food Adult Salmon

ট্রেন্ডলাইন ক্যাট ফুড অ্যাডাল্ট সালমন খাবারটি প্রাপ্ত বয়স্ক কোরাত বিড়ালদের জন্য একটি পারফেক্ট খাবার। এটিতে বিড়ালদের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপাদানই রয়েছে। এটি ওমেগা-৩,  EPA (eicosapentaenoic acid) এবং DHA (docosahexaenoic acid) রয়েছে। যা বিড়ালের পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করে পাশাপাশি হার্টকে সুস্থ রাখে। এছাড়াও এটি বিড়ালের ত্বক সতেজ রাখতে এবং কোটের বৃদ্ধিতে অনেক বেশি কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। 

Bonnie Adult Cat Food Chicken

বনি অ্যাডাল্ট ক্যাট ফুড চিকেন সাধারনত বিড়ালদের প্রোটিনের চাহিদা এবং পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করে থাকে। এছাড়াও এটি তে একটি সুষম খাদ্যের সকল গুনাবলিই বিদ্যমান। এটিতে কোন প্রকারের কৃত্রিম রঙ বা স্বাদ ব্যবহার করা হয় না। এটি বিড়ালের ইমিউন সিস্টমকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। বিড়ালের পেশির বিকাশ এবং বিড়ালের ত্বক সুন্দর করে। 

Royal Canin Cat Dry Food

বিড়ালছানাদের জন্য একটি আদর্শ শুকনো খাবার হলো রয়েল ক্যানিন ক্যাট ড্রাই ফুড। এটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মিশ্রণ থাকে যা  অল্প বয়সী বিড়ালছানাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। এটি অত্যন্ত হমজযোগ্য এবং পাচনতন্ত্ররের সুস্থ বিকাশে অনেক বেশি সহায়তা করে। এটিতে বিদ্যমান অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন এবং ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ প্রয়োজনীয় পুষ্টিচাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিড়ালকের চুলের সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।   

History

১৩৫০ থেকে ১৭৫৭ সালের মধ্যে রচিত থাই বউ তামার মায়েউ এবং থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে কোরাত বিড়ালদের সম্পর্কে প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কোড়াত বিড়ালগুলো প্রথম ব্রিটেনে ১৮৮৯ এবং ১৮৯৬ সালে ব্লু সিয়ামিজ নামে আবির্ভূত হয়। তবে ১৯০১ সালের মধ্যেই এই বিড়ালগুলো অদৃশ্য হয়ে থাকে। 

কোরাত বিড়ালগুলো  ১৯৫০ এর দশকে প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আবির্ভূত হয়। ১৯৫৯ সালে সিডার প্লেন ক্যাটারি প্রজননের জন্য একজোড়া কোরাত বিড়াল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করে। ১৯৬৬ সালে মেরিল্যান্ডের একজন প্রজনন বিদের প্রচেষ্টায় কোরাত বিড়াল চ্যাম্পিয়নশীপের মর্যাদা পায়। বর্তমানে কোরাত বিড়ালগুলো সিএফএ ফিফ টিআইসিএ এসিএফ দ্বারা স্বীকৃত। 

Appendix

কোরাত বিড়ালগুলো অত্যন্ত বুদ্ধিমান কোতুকপূর্ণ এবং সামাজিক একটি বিড়ালের জাত। এরা পরিবারের সকল বয়সের সদস্যদের সাথে খুব সহজেই শক্তিশালী বন্ধন গঠন করতে পারে। এই বিড়ালগুলো অনেক বড় সাইজের না হলেও বিড়ালগুলো অনেক শক্তিশালী এবং পেশিবহুল হয়ে থাকে। বিড়ালগুলো তাদের পূর্ণাঙ্গ পরিপক্কতায় পৌঁছাতে দুই থেকে চার বছর সময় নিয়ে থাকে। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে কোরাতে বিড়ালের সম্পর্কে সকল খুটিনাটি বিষয় বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। এর পরেও যদি কোন তথ্য জানার থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। 

Share with friends and families

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *