Himalayan Cats are The Perfect Addition to Any Family

হিমালয় বিরালগুলো পার্সিয়ান এবং সিয়ামিজ বিড়ালের একটি হাইব্রিড জাত যেটি প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিকাশিত হয়। এই বিড়ালগুলোর কান, মুখ, লেজ এবং কোট পার্সিয়ান বিড়ালদের মতো আর রঙ এবং চোখ সিয়ামিজ বিড়ালদের মতো। হিমালয় বিড়ালগুলো বড় আকৃতির হওয়া স্বত্তেও এদের মৃদু দৈত্য হিসেবে বিবচনা করা। হিলাময় বিড়ালদের শান্ত, স্নেহময়, ভদ্র এবং বুদ্ধিমান ব্যক্তিত্বের কারণে অনেকি হিমালয় বিড়ালদের অনেক বেশি পছন্দ করেন। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে হিমালয় বিড়ালদের খাদ্য, চিকিৎসা , যত্ন এবং ইতিহাস সম্পর্কে একটি বিস্তারিত এবং সুনির্দিষ্ট আলোচনা করা হবে। 

About

হিমালয় বিড়ালগুলো হিমিস নামেও অনেক বেশি পরিচিত। হিমাল্য বিড়ালগুলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি এই বিড়ালগুলোর অনেক বেশি ব্যক্তিত্বপূর্ণ। এছাড়াও এই বিড়ালগুলোর বেশ কিছু পরিচিতি রয়েছে। নিন্মে হিমালয় বিড়ালগুলোর পরিচিতি গুলো উল্লেখ করা হলোঃ 

  • হিমালয় বিড়ালগুলো শান্তশিষ্ট, ভদ্র, স্নেহময়, বুদ্ধিমান এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের হয়ে থাকে। 
  • হিমালয় বিড়ালগুলোর ওজন সাধারনত ৭ থেকে ১২ পাউন্ডের হয়ে থাকে। 
  • হিমালয় বিড়ালগুলোর দৈর্ঘ্য ১২ থেকে ১৬ ইঞ্চি হয়ে থাকে। 
  • হিমালয় বিড়ালগুলোর কোট লম্বা চুলের হয়ে থাকে। 
  • হিমালয় বিড়ালগুলোর কোট সাদা এবং ক্রিম রঙের হয়ে থাকে। 

এছাড়াও হিমালয় বিড়ালগুলোর চোখ নীল রঙের হয়ে থাকে। এদের কোটগুলো পয়েন্টেড মার্কিং, চকোলেট, সীল, নীল এবং লাল প্যাটার্নসের হয়ে থাকে। 

Health and Treatment

হিমালয় বিড়ালগুলো হাইব্রিড জাত হলেও এই বিড়ালগুলো অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর । তবে, পরিবেশগত এবং জেনেটিক কারণে হিমালয় বিড়ালগুলোর বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে থাকে। নিন্মে হিমালয় বিড়ালগুলো স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ 

Polycystic kidney disease

পরিসিস্টিক কিডনি রোগটি হিলাময় বিড়ালদের একটি নির্দিষ্ট জাতের বিড়ালদের হয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত হলে বিড়ালদের তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া, ক্ষুধা মন্দা, ঘন ঘন মুত্রত্যাগ, অলসতা এবং ওজন কমে যাওয়া সহ বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই বিড়ালকে চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যেতে হবে। এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালদের যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা প্রদান না করা হয় তাহলে কিডনি ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত জন্ম থেকেই এই রোগের লক্ষণ দেখা যায় ছয় মাস বয়সে এটি শনাক্ত করা যায়।    

Feline Lower Urinary Tract Disease

হিমালয় বিড়ালদের নীচের মুত্রানালীর একটি রোগ হলো ফেলাইন লোয়ার ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ডিজিজ। এটি বিড়ালের মুত্রনালী এবং মুত্রাশয়কে প্রাভাবিত করে। প্রস্রাবে রক্ত আসা এই রোগের প্রধাণ লক্ষণ এছাড়া প্রস্রাবের স্থানে অতিরিক্ত চাটা, প্রস্রাব করতে অসুবিধা হওয়া এই লক্ষণ গুলোও পরিলক্ষিত হয়। এই রোগের লক্ষণগুলো দেখা দিলেই বিড়ালকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। যদিও এই রোগের চিকিৎসা একটু কঠিন তবে চিকিৎসক pH এবং অন্যান্য কারণ শনাক্ত করে এই রোগের চিকিৎসা প্রদান করে থাকে। 

Breathing problems

ব্র্যাকিসেফালিক জাতের হিমালয় বিড়ালগুলোর শ্বাসকষ্ট রোগ হয়ে থাকে। দুর্বল প্রজনন বা রক্তরেখার কিছু জেনেটিক প্রবণতার কারণে সাধারণত শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালদের স্টেনোটিস নরস, দির্ঘায়িত নরম তালু, হাইপোপ্লাস্টিক শ্বাসনালী, কাশি, রিচিং, বমি, গ্যাগিং এর মতো লক্ষণ দেখা যায়। এই লক্ষণ গুলো দেখা মাত্রাই বিড়ালকে চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যেতে হবে। ঔষধের মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমেও এই রোগের চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে। 

Care

বিড়ালের সুরক্ষা এবং বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে অবশ্যই প্রতিনিয়ত বিড়ালের যত্ন নিতে হবে।  নিন্মে বিড়ালের যত্ন নেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলোঃ 

  • হিমালয় বিড়ালদের লম্বা এবং সিল্কি চুল হওয়ার কারণে এদের প্রতি সপ্তাহে ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালের নখগুলো পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রতি সপ্তাহে অন্তত একদিন বিড়ালের নখ গুলো ছেটে দিতে হবে। 
  • বিড়ালদের কানের বিভিন্ন রোগ  থেকে বিড়ালকে রক্ষা করতে অবশ্যই সপ্তাহে একদিন কান পরিক্ষা করতে হবে এবং যদি ময়লা থাকে তাহলে সেগুলো পরিষ্কার করতে হবে। 
  • বিড়ালদের দাঁত এবং মাড়ির রোগ থেকে রক্ষা করতে অবশ্যই বিড়ালকে রেগুলার দাঁত ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে। খেলতে দিতে হবে। 

এছাড়াও বিড়ালকে প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী খাবার দিতে হবে। বিড়ালকে পর্যাপ্ত পানি খাওয়াতে হবে হবে। বিভিন্ন প্রানীর আক্রমন থেকে রক্ষা করতে বাড়ির মধ্যেই বিড়ালকে রাখতে হবে। 

Food and Nutrition

বিড়লকে সুস্থ রাখতে এবং বিড়ালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিড়ালকে প্রতিদিন সুষম খাদ্য প্রদান করতে হবে। বর্তমানে বাজারে বিড়ালের জন্য বিভিন্ন খাবার পাওয়া যায়। নিন্মে বাজারের সেরা কয়েকটি খাবারের নাম উল্লেখ করা হলোঃ 

Open Farm Chicken and Salmon Blend Wet Cat Food

বিড়ালের জন্য অন্যতম এবং সেরা মানের একটি ভেজা খাবার হলো ওপেন ফার্ম চিকেন এবং সালমন ব্লেন্ড ভেজা খাবার। এটি বনের মুরগি এবং সালমন মাছের থেকে তৈরি একটি খাবার। এটিতে প্রোটিন আছে ৮%, চর্বি আছে ৬%, ফাইবার আছে ২%। এটি বিড়ালের সকল পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিড়ালের সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রন করে। এটি বিড়ালদের একটি সুস্বাদু খাবার তবে এটিতে কোন গন্ধ নেই। 

Jiu Peek Beef Recipe Canned Cat Food

বিড়ালের জন্য অন্যতম এবং সেরা গরুর মাংস থেকে তৈরি মজাদার টিনজাত খাবার হলো জিউক পিক বিফ রেসিপি টিনজাত খাবার। এটি সম্পূর্ণরুপে শস্য, সয়াবিন, আলু, ফিলার এবং শর্করা থেকে মুক্ত হয়ে থাকে। এটি তে মুল উপাদান হিসেবে ৯৩% তাজা মাংস থাকে। যা বিড়ালকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে। খাবারটিতে পুষ্টি উপাদান হিসেবে রয়েছে, ৯% অপরিশোধিত প্রোটিন, ৫.৫% চর্বি এবং ২% ফাইবার। এটি সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্ক বিড়ালদের জন্য একটি আদর্শ খাবার। 

Dr. LC’s CleanProtein Turkey Formula Canned Cat Food

প্রাপ্ত বয়স্ক বিড়ালদের জন্য বাজারের অন্যতম এবং সেরা একটি টিনজাত  বিড়ালের খাবার হলো ডঃ এলসির ক্লিনপ্রোটিন টার্কি ফর্মুলা টিনজাত বিড়াল খাবার। এটি একটি ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট যুক্ত খাবার। এটি প্রানীর পেশীর মাংস এবং বিভিন্ন অঙ্গের মিশ্রণ থেকে তৈরি করা হয়। এটি তে ইনফ্ল্যামেটরি ওমেগা-৩ এর উৎস হিসেবে স্যামন তেল এবং সবুজ ঠোটযুক্ত ঝিনুক করা হয়। এটি বিড়ালদের ত্বককে সুন্দর করে এবং বিড়ালকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে। এটি বিড়ালদের জন্য অত্যন্ত হজমযোগ্য একটি খাবার। এটিতে পুষ্টি উপাদান হিসেবে রয়েছে প্রোটিন ১১%, চর্বি ৯% এবং ফাইবার ১.৫%  

History

অন্যান্য বিরালদের জাতের বিপরীতে হিমালয় বিড়ালদের খুব বেশি দীর্ঘ কোন ইতিহাস নেই। এই বিড়ালগুলো ১০০ বছরের কম সময় ধরে বিদ্যমান তবে বড় চুলের সিয়ামিজ বিড়ালগুলোর বংশবৃদ্ধির প্রচেষ্টা কয়েক দশক ধরেই প্রসারিত হয়েছে। 

১৯২০-১৯৩০ এর দশকে সারা বিশ্বেই পার্সিয়ান এবং সিয়ামিজ বিড়ালদের চিহ্ন সহ বিড়াল তৈরি করার প্রচেষ্টা করা শুরু হয়। ১৯৩৫ সালে হার্ভার্ডের দুই জন চিকিৎসক পার্সিয়ান এবং সিয়ামিজ বিড়ালদের অধিনে স্বতন্ত্র বিড়ালের জাত প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করে। ১৯৩৬ সালে তারা নতুন  বিড়াল প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেটাকে কোন প্রকারের শৌখিন বিড়ালের জাত হিসেবে স্বীকৃত প্রাদন করা হয়না। ১৯৫০ সালে দিকে পৃথক মার্কিন প্রজনন সংস্থা প্রজননের চেষ্টা শুরু করে এবং তারা নতুন জাত প্রতিষ্ঠা করা । ১৯৫৭ সালের শেষের দিকে ক্যাট ফ্যান্সিয়ারস অ্যাসোসিয়েশন মিসেস গোফোর্থ নামের একজন প্রজনন কারীর তৈরি হিমালয় বিড়ালকে স্বীকৃত প্রাদান করে। বর্তমানে হিমালয় বিড়ালগুলো সিএফএ, টিআইসি, এএফসি দ্বারা স্বীকৃত বিড়ালের জাত। 

Appendix

হিমালয় বিড়ালগুলো মৃদু দৈত্য আকারের বিড়াল। যার রঙ সিয়ামিজ বিড়ালের মতো এবং মুখ ও শরীর পার্সিয়ান বিড়ালের মতো। এই বিড়ালগুলো তাদের নম্র এবং ভদ্র ব্যক্তিত্বের জন্য অনেকের কাছেই প্রিয় একটি বিড়াল। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে হিমালয় বিড়ালদের ইতিহাস, স্বাস্থ্য চিকিৎসা এবং যত্ন সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। এরপরেও যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সেটি কমেন্টের মাধ্যেমে জানাতে পারেন। 

Share with friends and families

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *