Bombay Cats are The Perfect Blend of Beauty and Personality

বোম্বাই বিড়ালগুলো গৃলপালিত বিড়ালের একটি জনপ্রিয় জাত। এদের জেট-কালো পশম, উজ্জ্বল সোনালি চোখ এবং বড় দেহের জন্য এদেরকে ক্ষুদ্র প্যান্থারের মতো দেখায়। এই বিড়ালগুলো সাধারণত একটি হাইব্রিড বিড়াল। এরা আমেরিকান শর্টহেয়ার এবং বার্মিজ বিড়ালগুলোর একটি মিশ্রণ প্রজাতির বিড়াল। এদের বন্ধুত্বপূর্ণ এবং স্নেহশীল ব্যক্তিত্বের কারণে অনেকেরই প্রিয় বিড়াল। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে বোম্বাই বিড়ালের স্বাস্থ্য চিকিৎসা যত্ন খাদ্য এবং ইতিহাস সম্পর্কে একটি বিস্তারিত এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য আলোচনা করা  হবে। 

About

বোম্বাই বিড়ালগুলো এক ধরণের ছোট চুলের বিড়াল যা বার্মিজ এবং কালো আমেরিকান শর্টহেয়ার বিড়ালের থাকে প্রজনন করা হয়েছে। এই বিড়ালদের বেশ কিছু পরিচিতি রয়েছে। নিন্মে বোম্বাই বিড়ালদের পরিচিতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

 

  • বোম্বাই বিড়ালগুলো স্নেহশীল এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকে। 
  • একটি পূর্ণাঙ্গ বোম্বাই বিড়ালের ওজন ১৫ পাউন্ডের হয়ে থাকে। 
  • বোম্বাই বিড়ালদের দৈর্ঘ্য ২০ ইঞ্চি অব্দি লম্বা হয়ে থাকে। 
  • বোম্বাই বিড়ালদের রঙ কালো হয়ে থাকে। 
  • বোম্বাই বিড়ালদের কোটে ছোট সাইজের চুল থাকে। 

 

এছাড়াও বোম্বাই বিড়ালগুলোর চোখগুলো সোনা বা তামার মতো হয়ে থাকে। এই বিড়ালগুলোর জীবনকাল ২০ বছর অব্দি হয়ে থাকে। 

 

Health and Treatment

বোম্বাই বিড়ালগুলো অন্যান্য বিড়ালদের তুলনায় সুস্থ এবং দীর্ঘস্থায়ী বিড়ালের জাত। তবে এই বিড়ালদের অন্যান্য বিড়ালদের মতো কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে। নিন্মে বোম্বাই বিড়ালদের স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলোঃ 

 

Craniofacial Defects

বোম্বাই বিড়ালদের একটি বংশগত রোগ হলো ক্র্যানিওফেসিয়াল ত্রুটি।এটিকে সংক্ষিপ্ত ভাবে BHD ও বলা হয়। অনেক সময়  বিএচিডি নিয়ে জন্মগ্রহণ করা বিড়ালছানাগুলো মৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে কিংবা অল্প সংখ্যক বেচে থাকে। বিএইচডি তে আক্রান্ত বিড়ালছানা গুলোর মাথার খুলিগুলো মারাত্বকভাবে বিকৃত হয়ে থাকে এবং একটি থেকে মস্তিস্ক বের হয়ে যেতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালের অস্বাভাবিক মাথার খুলি গঠন, অনুপস্থিত এবং মস্তস্কের প্রসারণের মতো লক্ষণ দেখা যায়। এই লক্ষণ গুলো দেখা দেওয়া মাত্রই বিড়ালকে চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যেতে হবে।    

Hypertrophic Cardiomyopathy

অন্যান্য বিড়ালদের মতো বোম্বে বিড়ালদের একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হলো হাইপারট্রফিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি (এইচসিএম)। এইচসিএম বলতে বিড়ালের ভেন্ট্রিকলের দেওয়ালের ঘন হয়ে যাওয়া কে বোধায় যেটি হৃদপিন্ডের পাম্প করা রক্তের কার্যক্ষমতাকে হ্রাস করে। বিড়াল এই রোগে আক্রান্ত হলে অলস শ্বাস নেওয়া, অলসতা কাজ করার মতো লক্ষণ দেখা যায়। এই লক্ষণ গুলো দেখা দেওয়া মাত্রই বিড়ালকে চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যেতে হবে। এইচসিএম রোগের কোন নিরাময়যোগ্য চিকিৎসা নেই তবে ঔষুধ সেবন এবং খাবারের মাধ্যমে এই রোগকে নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব।   

Aortic Thromboembolism

মিশ্র জাতের বিড়ালদের একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হলো অর্টিক থ্রম্বোইম্বোলিজম। সাধারণত মহিলা বিড়ালদের মধ্যে এই রোগের প্রবনতা বেশি থাকে। এটি একটি বিড়ালের জন্য মারাত্বক রোগ। যখন এই রোগের কারণে বিড়ালের রক্ত প্রবাহ কমে যায় এবং রক্ত মহাধমনিতে আটকে যায়। আর মহাধমনি যেহেতু হার্টকে থ্রম্বোইম্বোলিজম হার্টিকে প্রভাবিত করে তাই বিড়ালের জন্য এই বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি করে। এই রোগে আক্রান্ত বিড়ালদের পিছনের অঙ্গে হঠ্যাত ব্যাথা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, চেহারা ফ্যকাসা হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়। এই লক্ষণ গুলো দেখা দেওয়া মাত্রই বিড়ালকে চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যেতে হবে। সাধারণত ঔষধ এবং অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। 

Care

বিড়ালের সুস্থতা নিশ্চিত এবং বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে প্রতিদিন যত্ন নিতে হবে। নিন্মে বোম্বাই বিড়ালের যত্ন নেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলোঃ 

 

  • বোম্বাই বিড়ালগুলোর কোটের চুলগুলো ছোট সাইজের হয়ে থাকে তাই এদের কোটের তেমন যত্ন করতে হয় না তবে কোটগুলো থেকে মরা চুল অপসারণ করতে এবং কোটকে পরিপাটি রাখতে সপ্তাহে একদিন ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বোম্বাই বিড়ালগুলো মাঝারি বড় সাইজের বিড়াল। তাই এই বিড়ালদের সুস্থতার জন্য ব্যায়াম করাতে হবে এবং খেলতে দিতে হবে। 
  • বোম্বাই বিড়ালদের দাঁত এবং মাড়ির রোগ থেকে রক্ষা করতে বিড়ালকে প্রতিদিন ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালের নখগুলো পরিষ্কার রাখার জন্যে প্রতি সপ্তাহে নখগুলো ছেঁটে দিতে হবে। 
  • বিড়ালের কানের রোগ এড়াতে বিড়ালের কান পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং বিড়ালের কানে কোন প্রকারের ময়লা থাকলে তা পরিষ্কার করতে হবে। 

 

এছাড়াও বিড়ালকে প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী সুষম খাদ্য প্রদান করতে হবে এবং বিড়ালকে বাহিরের আঘাত থেকে রক্ষা করতে বিড়ালকে বাড়ির মধ্যেই রাখতে হবে। 

Food and Nutrition

বিড়ালের শারীরিক সুষম বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করার জন্য প্রতিদিন বিড়ালকে সুষম এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার দিতে হবে। নিন্মে বোম্বাই বিড়ালের জন্য সেরা কয়েকটি খাবারের নাম উল্লেখ করা হলোঃ  

Smalls Fresh Smooth Bird

তাজা মুরগির থেকে প্রস্তুত করা বিড়ালের জন্য আদর্শ খাবার হলো Smalls Fresh Smooth Bird. এটিতে বিড়ালের জন্য সকল পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এটিতে প্রোটিন রয়েছে ২১% চর্বি রয়েছে ৮.৫% এবং ফাইবার রয়েছে ০.৪%। এটি অত্যন্ত হজমযোগ্য এবং হাইড্রেশন যুক্ত একটি খাবার। এটিতে কোন প্রকারের ক্ষতিকারক উপাদান ব্যবহার করা হয় না। এটি কম কার্বোহাইড্রেট সামগ্রী ব্যবহার করা হয় যার জন্য এটি বিড়ালের জন্য অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। এটি বিড়ালের পুষ্টিচাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিড়ালের ইমিউন সিস্টেমকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে এবং বিড়ালের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। 

 

Wellness Complete Health Pate Chicken Entree Grain-Free  Canned Cat Food

উচ্চমানের প্রাণির মাংস, ফল এবং সবজি থেকে তৈরি বিড়ালের জন্য অন্যতম একটি সেরা খাবার হলো Wellness Complete Health Pate Chicken Entree Grain-Free Canned Cat Food. এটি বিড়ালের জন্য সকল প্রোয়জনীয় উপাদান যেমন প্রোটিন ১০.৫%, চর্বি ৭% এবং ফাইবার ১% রয়েছে। এছাড়াও এটিতে রয়েছে ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড যা বিড়ালের ত্বককে অনেক বেশি সতেজ এবং উজ্জ্বল রাখে। এটি সম্পুর্ণ এলার্জি ফ্রি মাংস থেকে তৈরি বিড়ালের জন্য অন্যতম সেরা একটি ভেজা খাবার।   

 

Solid Gold Indigo Moon High Protein Wild Alaskan Pollock & Eggs Recipe

বিড়ালের জন্য গ্লুটেল এবং শস্য মুক্ত একটি আদর্শ শুকনো জাতীয় খাবার হলো Solid Gold Indigo Moon High Protein Wild Alaskan Pollock & Eggs Recipe. এটি প্রাপ্ত বয়স্ক বিড়ালদের জন্য একটি আদর্শ খাবার। এটিতে প্রোটিন রয়েছে ৪২%, চর্বি রয়েছে ২০% এবং ফাইবার রয়েছে ৩%। এছারাও এটিতে থাকা ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড বিড়ালের কোটকে দীর্ঘ এবং চকচকে করতে সাহায্য করে। এটিকে অ্যান্টিওক্সিডেন্ট রয়েছে যা বিড়ালের ইমিউন সিস্টেমকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে।  

 

History

বোম্বাই বিড়ালগুলো কেন্টারির একজন প্রজননকারী নিকি হর্ণার এর মাধ্যমে বিকাশিত হয়েছে । নিকি হর্ণার ১৯৫৪ সালে এই ক্ষুদ্র কালো প্যান্থারের মতো বিড়ালের একটি জাত তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন উনার প্রথম বারের চেষ্টা ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় বার ১৯৬৫ সালে সফল হয়। ১৯৭০ সালে ক্যাট ফ্যান্সিয়ার অ্যাসোসিয়েশন এবং ১৯৭৯ সালে আন্তজার্তিক ক্যাট অ্যাসোসিয়েসন দ্বারা বিড়ালের এই জাততি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত লাভ করে। বর্তমানে এই বিড়ালের এই জাতটি টিআইসিএ, এসিএফ এবং সিসিএ-এএফসি দ্বারা স্বীকৃত। 

Appendix

বোম্বাই বিড়ালকে গৃহে পালনের জন্য খুজে পাওয়া টা অনেক কঠিন হয়ে থাকে। এই বিড়ালগুলো তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের কারণে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণীদের সাথেও খুব সহজেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। আশা করি আজকের আর্টিকেরলের মাধ্যমে বোম্বাই বিড়ালের সকল খুটিনাটি ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে একটি বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। এর পরেও যদি কোন তথ্য থেকে থাকে তাহলে তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।  

Share with friends and families

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *