Savannah Cats are The Perfect Cat for Active Owners

 

Savannah হলো একটি হাইব্রিড জাতের বিড়াল। যেটা ২০ শতকের দিকে লেপ্টাইলুরাস সার্ভাল বিড়াল  এবং গৃহপালিত বিড়াল (ফেলিস ক্যাটাস) এর সাথে মিলিত হওয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়েছিল। সার্ভালের আবাসস্থলের নামানুসারে সাভানার নামকরণ করা হয়েছিলো। সাভানা বিড়ালগুলো আফ্রিকার সৌন্দর্য প্রভাবিত করে। সাভানা বিড়ালগুলো সাধারণত আকারে অবেক বড় এবং চর্বিহীন ও বাদামী কোটযুক্ত হয়ে থাকে। 

২০১৬ সালে একটি পুরুষ সাভানা বিড়াল ১৯.১ ইঞ্চি লম্বা হয়েছিল যা সর্বোচ্চ উচ্চতার বিড়াল হিসেবে বিশ্ব রেকর্ড করে। সাভানা বিড়ালগুলো বাড়ির অন্যান্য পোষা প্রাণী এবং বয়স্ক শিশুদের সাথে অনেক বেশি মিশুক প্রকৃতির  এবং স্নেহপূর্ণ হওয়ার কারণে অনেকেই বাড়িতে সাভানা বিড়ালগুলোকে পালন করে থাকেন। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে সাভানা বিড়াল এবং সাভানা বিড়ালের খাদ্য, চিকিৎসা, ইতিহাস ইত্যাদি সকল খুটিনাটি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। 

About

সাভানা বিড়ালগুলো সামাজিক ও বুদ্ধিমান প্রকৃতির হয়ে থাকে। এই বিড়াল গুলো খুব সহজেই মালিক, বাড়ির অন্যান্য পোষাপ্রাণী এবং পরিবারের বাচ্চাদের সাথে অনেক বেশি মিশুক এবং স্নেহপূর্ণ হয়ে থাকে। অন্যান্য বিড়ালের থেকে এই বিড়ালগুলো অনেক বেশি প্রশিক্ষণযোগ্য হয়ে থাকে। নিন্মে সাভানা বিড়ালের আরও কিছু পরিচিতি দেওয়া হলোঃ

  • সাভানা বিড়ালগুলো আকারের দিক থেকে অনেক বড় হয়ে থাকে। এদের ওজন ১২ থেকে ২৫ পাউন্ডের হয়ে থাকে। 
  • সাধারণত সাভানা বিড়াল গুলোর দৈর্ঘ্য ২০ থেকে ২২ ইঞ্চি অব্দি হয়ে থাকে। 
  • সাভানা বিড়ালগুলো বড় আকৃতির হলেও এদের কোট ছোট এবং মাঝারি সাইজের হয়ে থাকে। 
  • সাভানা বিড়ালগুলোর কোটের রঙ তেঁতুল, কালো/বাদামী দাগযুক্ত, কালো/রুপালী দাগযুক্ত বর্ণের হয়ে থাকে।
  • সাধারণত সাভানা বিড়ালগুলোর চোখগুলো সবুজ রঙের হয়ে থাকে।
  • জীবন কাল ২০ বছর অব্দি হয়ে থাকে।
  • সাভানা বিড়াল গুলীর পা এবং অনেক বেশি ঘাড় লম্বা হয়।
  • সাভানা বিড়ালের পিছনের পা তার সামনের পায়ের থেকে কিছুটা লম্বা হয়ে থাকে। 
  • সম্পূর্ণ পরিপক্ক হতে এবং প্রাপ্তবয়স্ক আকারে পৌঁছাতে প্রায় ৩ বছরের কাছাকাছি সময় লেগে থাকে। 
  • সাভানা বিড়ালগুলো চমৎকার জাম্পার। তারা 8 ফুট পর্যন্ত লাফ দিতে পারে এবং সহজেই কোন কিছুতে আরোহণ করতে পারে।

সাভানা বিড়ালগুলোর আকার অনেক বড় হবার কারণে এই বিড়ালগুলোকে অনেকেই কুকুরের সাথে তুলনা করেন। আবার অনেকেই এই বিড়ালগুলোই লম্বা পা এবং ঘাড়ের জন্য এদেরকে জিরাফ বলে থাকেন। 

 

Health And Treatment

সাভানা বিড়ালদের বাহ্যিকভাবে বন্য প্রাণীদের মতো দেখালেও এদের শরীরে অল্প পরিমাণ বন্য বিড়ালদের রক্ত থাকে। আর তাই এই বিড়ালগুলোও অনেকটা গৃহপালিত বিড়ালদের মতোই হয়ে থাকে। যদিও সাভানা বিড়ালের হাইব্রিড জাতগুলোর অবস্থা এখনো তাদের বন্য জাতকে  প্রভাবিত করে তাই অন্যান্য বিড়ালদের থেকে এদের স্বাস্থ্যগত বেশ কিছু পার্থক্য থাকে। নিন্মে সাভানা বিড়ালের স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা সম্পর্কে বর্ণনা করা হলোঃ 

Hypertrophic Cardiomyopathy

Hypertrophic Cardiomyopathy হলো বিড়ালের একটি হৃদরোগের নাম। বিড়াল এই রোগে আক্রান্ত হলে হৃদপিন্ডের পেশি ঘন হয়ে যায় আর এর ফলস্বরুপ বিড়ালের হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা কমে যায়। হাইপারট্রফিক কার্ডিওমায়োপ্যাথিতে আক্রান্ত বিড়ালের প্রধান লক্ষণ হলো  শ্বাস প্রশ্বাস বেড়ে যাওয়া। 

হাইপারট্রফিক কার্ডিওমায়োপ্যাথিতে আক্রান্ত হলে অবশ্যই বিড়ালকে ইকো কার্ডিগ্রাফি পরীক্ষা করাতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বিড়ালকে ঔষুধ খাওয়াতে হবে। যদি ঠিক মতো বিড়ালকে ঔষুধ না খাওয়ানো হয় তাহলে বিড়ালের হার্টফেল করার ঝুকি বেড়ে যায়।   

Male Sterility

অন্যান্য হাইব্রিড বিড়ালের জাতের মতোই সাভানা বিড়ালদের একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হলো পুরুষ স্টেরিলিটি। সাধারনত পুরুষ সাভানা বিড়ালগুলো চার প্রজন্ম পর্যন্ত স্টেরিলিটি জীবানু থেকে মুক্ত থাকে।

পুরুষ স্টেরিলিটিতে আক্রান্ত বিড়ালের কোন চিকিৎসা নেই তবে তবে এই রোগ বিড়ালের জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করে না।    

Pyruvate Kinase Deficiency

পাইরুভেট কিনেস হলো লোহিত রক্ত কণিকার একটি এনজাইম। এটি বিড়ালের বেচে থাকার জন্য এবং শক্তি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। লোহিত রক্ত কণিকায় পাইরুভেট কিনেসের ঘাটতি হলে বিড়ালের রক্তশূণ্যতা হয়। 

রক্তে পাইরুভেট কিনেসের ঘাটতি হলে অবশ্যই তা চিকিতসকের নিয়ে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে এবং চিকিৎসার মাধ্যমে রক্তে পাইরুভেট কিনেসের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। 

Taurine Deficiency

টউরিন হলো এক প্রকারের অ্যামিনো এসিড যেটা বিভিন্ন মাংসের মধ্যে থেকে পাওয়া যায়। বিড়ালের সুস্থ থাকার জন্য টউরিন সমৃদ্ধ খাদ্য অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।বিড়ালের শরীরে টউরিনের ঘাটতি হলে দৃষ্টিশক্তি ঘাটনি, হার্টের সমস্যা সহ আরো ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি হয়। 

বিড়ালের শরীরে টুরিনের ঘাটতি দেখা দিলে বিড়ালকে চিকিতসকের নিকট নিয়ে যেতে হবে। এবং টউরিনের ঘাটতি রোধ করার জন্য বিড়ালদের উচ্চ-প্রোটীন এবং সম্পুরক খাদ্য খাওয়াতে হবে।  

Care

সাভানা বিড়ালকে সুস্থ এবং রোগ মুক্ত রাখার জন্য অবশ্যই প্রতিনিয়ত বিড়ালের যত্ন নিতে হবে। নিন্মে বিড়ালের সুস্থতা রক্ষার ক্ষেত্রে যেসকল যত্ন নিতে হবে তা দেওয়া হলোঃ 

  • সাভানা বিড়ালের পা-গুলো অনেক বেশি লম্বা হয়ে থাকে সেইসাথে  সাভানা বিড়ালগুলো উঁচু স্থানে উঠতে অনেক বেশি পছন্দ করে। তাই, সাভানা বিড়ালদের জন্য নিরাপদ উঁচু স্থান যেমন, গাছ বা অন্যান্য কিছুর ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
  • সার্ভাল বিড়ালদের মতো অনেক সাভানা বিড়ালই পানিতে খেলতে পছন্দ করে তাই বিড়ালকে পানিতে খেলতে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। 
  • সাভানা বিড়ালদের কোটগুলো অন্যান্য বিড়ালদের তুলনায় ছোট হয়ে থাকে। আর তাই এগুলার যত্ন নেওয়াও সহজ। কোটের মরা চুল গুলো পরিষ্কার করতে এবং কোটের যত্ন নেওয়ার জন্য সপ্তাহে সর্বনিন্ম একবার ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালের দাঁতের রোগগুলো থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত বিড়ালকে দাঁত ব্রাশ করাতে হবে। 
  • বিড়ালের নখগুলোকে পরিষ্কার রাখতে নখগুলোকে কাটতে হবে। 
  • সাভানা বিড়ালগুলো অনেক বড় আকারের হয়ে থাকে তাই এদেরকে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করাতে হবে। 

বিড়ালের আয়ু দীর্ঘস্থায়ী করতে এবং বিড়ালকে সুস্থ রাখার জন্য প্রতিনিয়তই উপোরক্ত যত্নগুলো নিতে হবে।

 

Food And Nutrition

বিড়ালের সঠিক বৃদ্ধি এবং শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য অবশ্যই বিড়ালকে সুষম খাদ্য দিতে হবে এবং বিড়ালের পুষ্টি চাহিদার ও পূরণ করতে হবে। নিন্মে সাভানা বিড়ালের খাদ্য ও পুষ্টি নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ 

প্রোটিন জাতীয় খাবার বিড়ালের খাদ্য এবং পুষ্টির চাহিদার পূরণে অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে। আর মাংস জাতীয় খাদ্য অনেক বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়। বর্তমানে কাঁচা মাংসের পাশাপাশি অনেক প্রোটিন সম্পৃদ্ধ খাবার কিনতে পাওয়া যায়। যেমনঃ 

  • Nutro Grain Free
  • Blue Wilderness
  • Raw Boost
  • Blue Wilderness High Protien
  • Puria Friskies
  • Earthboran Holistic
  • Savannah Kitten Food

এছাড়াও বিড়ালের খাদ্য এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য হাঁস, মুরগি, গরু মহিষের কাঁচা মাংস ও খাওয়াতে পারেন। বিড়ালকে অবশ্যই রুটিন অনুযায়ী খাবার দিতে হবে। পর্যপ্ত পরিমাণে পানি পান করাতে হবে।  

History

১৯৮৬ এর ৭ই এপ্রিল, জুডি ফ্র্যাঙ্ক নামক ব্যক্তি প্রথম সাভানা জাতের বিড়ালের জাত তৈরির জন্য  একটি মহিলা সিয়ামিজ গৃহপালিত বিড়ালের সাথে একটি পুরুষ সার্ভাল বিড়ালের ক্রস-ব্রীড করেন। এবং এটিই ছিল প্রথম যেখানে সাভানাকে একটি তুর্কি অ্যাঙ্গোরা পুরুষ বিড়ালের সাথে প্রজনন করা হয়। এবং ১৯৮৯ সালের এপ্রিলে সাভানা F2 বিড়ালছানাদের জন্ম দেয়। 

১৯৯৬ সালে, প্যাট্রিক কেলি এবং জয়েস স্রোফ সাভানা প্রজাতি বিড়ালের মূল  স্ট্যান্ডার্ডের সংস্করণ লিখেন এবং এটি বোর্ডের কাছে উপস্থাপন করেন। ইন্টারন্যাশনাল ক্যাট অ্যাসোসিয়েশনের ( টিআইসিএ) ২০০১ সালে, এটিকে একটি নতুন নিবন্ধিত জাত হিসাবে গ্রহণ করে এবং ২০১২ সালের মে মাসে, টি আই সি এ সাভানা বিড়ালকে একটি যোগ্য ও চ্যাম্পিয়নশিপ বিড়ালের জাত হিসাবে গ্রহণ করে। সাভানা বিড়ালগুলো WCF এবং সি সি এ- এ এফ সি দ্বারা স্বীকৃত বিড়ালের জাত।  

Appendix

সাভানা বিড়ালগুলো বন্য চেহারার অধিকারী এবং চমৎকার প্রকৃতির পারিবারিক পোষা বিড়াল । এরা শুধু মাত্র বাহ্যিকভাবে সুন্দরই নয় এরা আকারে বড় এবং এরা অনেক বেশি কৌতুকপূর্ণ বিড়াল।  এছাড়াও এই বিড়ালগুলো পরিবারের বাচ্চা ও বাড়ির অন্যান্য পোষাপ্রাণীদের সাথে মিশতে অনেক বেশি পছন্দ করে।

তবে এই বিড়ালগুলোর কিছু  সমস্যা হলো,  এই বিড়ালগুলোর প্রজনন ক্ষমতা কম এবং এই বিড়ালগুলোকে গৃহে পালনের জন্য আইনি অনুমুতির প্রয়োজন হয় একই সাথে এই বিড়াল গুলো অনেক বেশি ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে সাভানা বিড়াল সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ এবং বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন এর পরেও যদি কোন তথ্য জানার থাকে তাহলে সেটি কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। 

 

Share with friends and families

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *